বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিশু দেখে সন্তানের প্রতি প্রকৃত স্নেহ হয় না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, একদিন প্যান্ট-শার্ট পরে পকেটে চিপস নিয়ে গিয়ে বাচ্চা দেখা হয় না। শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন পারিবারিক পরিবেশ।
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক মামলার শুনানিকালে বুধবার (২৭ জুন) এক শিশুর বাবার উদ্দেশে এসব কথা বলেন।
শুনানি নিয়ে আদালত আট বছর বয়সী ওই কন্যাশিশুটি চার সপ্তাহ তার মায়ের কাছে থাকবে বলেছেন। একইসঙ্গে, বাবা সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন যেকোনো সময় শিশুটির সঙ্গে দেখা করে নিজের কাছে রাখার সুযোগ পাবেন বলেও আদেশ দেন হাইকোর্ট। আগামী ২৪ জুলাই পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রেখে সেদিন শিশুর বাবা-মাকে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী সূত্র বলেছে, ২০০৮ সালে ওই শিশুর মা-বাবার বিয়ে হয়। মা ও বাবার বাড়ি নওগাঁ। দাম্পত্য জীবনে মনোমালিন্যের জেরে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পাঠান। শিশুটি তার মায়ের কাছেই ছিল। এ অবস্থায় শিশুকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়েছে দাবি করে হাইকোর্ট রিট করেন শিশুটির বাবা। রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৩০ মে হাইকোর্ট রুল দেন এবং শিশুটিকে ২৭ জুন আদালতে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও শিশুর মাকে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ নওগাঁ সদর থানার পুলিশ শিশুটিকে আদালতে হাজির করে। এদিন আদালতে শিশুটির বাবা ও মা হাজির হন।
আদালতে শিশুর বাবার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এস এম শাহরিয়ার কবির। শিশুটির মাকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি। মায়ের পক্ষে শুনানি করেন কমিটির প্যানেল আইনজীবী আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত। আদালত শিশুটির মা ও বাবার বক্তব্যও শোনেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম।
আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত গণমাধ্যমকে বলেন, ওই চার সপ্তাহের মধ্যে শিশুর মা-বাবা এবং তাদের আইনজীবীদের শিশুটি কার কাছে থাকবে ও কীভাবে বেড়ে উঠবে, সে বিষয়টি আপসে নিষ্পত্তি করার কথা বলে আদালত ২৪ জুলাই পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।