তদন্তাধীন মামলায় আসামিদের জামিননামা পুলিশের জিআর (সাধারণ নিবন্ধন) শাখার মাধ্যমে দাখিল এবং রেজিস্ট্রি করার নিয়ম বাহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১২ নভেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে লিভ টু আপিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
চেম্বার আদালতের আদেশের ফলে এখন আবার আগের বিধান চালু হবে। অর্থাৎ এখন থেকে সাঁটলিপিকার নথিভুক্ত করা এবং জামিনাদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়া পুলিশের হাতেই থাকলো।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মুরাদ রেজা। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. একরামুল হক টুটুল।
এর আগে পুলিশের মাধ্যমে জামিননামা দাখিল এবং রেজিস্ট্রির বিধান বাতিল করে ঢাকার সাবেক মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) দেওয়া আদেশ বাতিল করা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে। এ ছাড়া রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিচারিক আদালতে পুলিশের মাধ্যমে জামিননামা দাখিল এবং রেজিস্ট্রির বিধানের কার্যকারিতা স্থগিত করে হাইকোর্ট। গত রোববার (১১ নভেম্বর) এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ আদেশ দেয়।
প্রসঙ্গত, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো গত ১২ সেপ্টেম্বর পুলিশের মাধ্যমে জামিননামা দাখিল ও রেজিস্ট্রির বিধান বাতিল করে দেন। পরে যে বিচারক জামিন দেবেন, সেই আদালতের স্টেনোগ্রাফারদের মাধ্যমে জামিননামা দাখিল করার বিধান চালু করেন। পরবর্তীতে ঢাকার বর্তমান মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জাহিদুল কবির সাবেক সিএমএম মো. সাইফুজ্জামান হিরোর সেই আদেশ বাতিল করেন। বর্তমান সিএমএম মো. জাহিদুল কবিরের ওই অফিস আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, অধস্তন আদালতের বিচারকদের জন্য সুপ্রিমকোর্ট থেকে তৈরিকৃত ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারের ৭২ ধারায় বলা আছে, মামলা তদন্তকালিন সময়ে পুলিশের জিআর শাখায় সকল দলিলপত্র পুলিশ ফাইলে রক্ষিত থাববে। এছাড়া ১৯৪৩ সালের পিআরবি (পুলিশ রেগুলেশন অফ বেঙ্গল) এর ৫৪০ বিধি অনুযায়ী জামিনপ্রাপ্ত আসামির জামিননামা পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় জমা রাখবে। এছাড়া ২০০৭ সালে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের সময় আইন মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করে এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে বলা হয়েছে। ফলে আসামিদের মুক্তির প্রাথমিক সকল তথ্য পুলিশ রেজিস্টারে রক্ষিত থাকবে। তা না হলে মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।