সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনসহ যেকোনো সংবাদ মাধ্যমে শিশু আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলার শিশু আসামির নাম, ঠিকানা, ছবিসহ তার পরিচিতি তুলে ধরা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে শিশু অপরাধীর ছবি প্রকাশ করায় পত্রিকার সম্পাদকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামকে লিখিতভাবে এ ব্যাখ্যা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্ট বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আইন, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন-আদালত-মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন ল’রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবং ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান।
এর আগে, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনসহ যেকোনো সংবাদ মাধ্যমে শিশু আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলার শিশু আসামির নাম, ঠিকানা, ছবিসহ তার পরিচিতি তুলে ধরা বন্ধে রিট আবেদন করা হয়।
আইনজীবী সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
রিটে শিশু আইন, ২০১৩ এর ২৮ ধারা অনুযায়ী, শিশু অপরাধীর নাম, ঠিকানা, ছবিসহ তার পরিচিতি সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনসহ যেকোনো সংবাদ মাধ্যমে প্রচার-প্রকাশ বন্ধের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, মর্মে রুল চাওয়া হয়।
আইনজীবী সুমন বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থায় শিশু অপরাধীদের নাম, ঠিকানা, ছবি বা পরিচিতি তুলে ধরার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
শিশু আইন, ২০১৩ এর ২৮ ধারা অনুযায়ী, ইচ্ছা করলেই কোনো সংবাদ মাধ্যম বা কেউ শিশু অপরাধী বা বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো শিশুর নাম, ঠিকানা, ছবি, পরিচিতি প্রচার বা প্রকাশ করতে পারবে না। এমন কোনো বর্ণনাও প্রচার-প্রকাশ করা যাবে না, যাতে শিশু অপরাধী বা বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিশুটির পরিচিতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
কিন্তু গত ৫ নভেম্বর ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ‘বয় গেটস টেন ইয়ার্স ফর কিলিং ক্লাসমেটস’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করে। সে খবরে শিশু অপরাধীর পরিচিতি প্রকাশ করা হয়েছে; যা স্পষ্টত শিশু আইন, ২০১৩ এর ২৮ ধারার লঙ্ঘন। এ কারণে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।