একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে দুই দফায় দায়িত্ব পালন করবেন এক হাজার ৬৩৯ জন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনের আগে অনিয়ম তদারকির জন্য ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবেন। ৩০০ সংসদীয় আসনের জন্য দুই দফায় আলাদা করে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। বিধিভঙ্গের কারণে সর্বনিম্ন ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত সাজা দিতে পারবেন তারা।
ভোটগ্রহণের আগে-পরে চারদিনের জন্য মাঠে নামতে যাওয়াদের মধ্যে ৬৪ জন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ৬৯১জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৮৮৫জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। ইতোমধ্যে তাদের দায়িত্ব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোয় চিঠি দিয়েছে ইসি। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে নির্বাচনের মাঠে দেখা যাবে এই ম্যাজিস্ট্রেটদের। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম লঙ্ঘনকারীদের সংক্ষিপ্ত বিচারের মাধ্যমে সাজা দেবেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা। আর নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, তাদের কর্মী-সমর্থকরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাধ্যমে তাদের তাৎক্ষণিক সাজাসহ অর্থিক জরিমানা করতে পারবেন তারা। একইভাবে, ভোটের আগে-পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা ভোটের দিন কেন্দ্র দখল, জোরপূর্বক ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করার চেষ্টাকারীদের জরিমানাসহ সাজা দিতে পারবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনে সব দল ও প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ তৈরি এবং অশুভ তৎপরতা রোধে ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করবেন। ইতোমধ্যে কমিশন থেকে নির্বাচনের বিধি-বিধান এবং দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রতিটি উপজেলায় একজন করে, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত প্রতি তিন-চারটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে, সিটির বাইরে জেলা সদরে প্রতি পৌর এলাকায় এক থেকে দুইজন করে এবং পার্বত্য এলাকায় ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত তিন থেকে চারটি উপজেলার জন্য একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল টিমের সদস্য হিসেবে ঘুরে ঘুরে অপরাধ পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। বিধি-ভঙ্গ নজরে এলে তাৎক্ষণিক সাজা দেবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ, প্রার্থীদের আচরণবিধি ভঙ্গের তদারকি এবং ক্ষমতার অপ্রব্যবহার নিয়ন্ত্রণে দুটি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি (ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি) গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩০০ সংসদীয় আসনের জন্য ১২২টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতি কমিটিতে দু’জন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন।
গত ২৫ নভেম্বর এই ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব দেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১০ ডিসেম্বর ৩০০ সংসদীয় আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি। একইসঙ্গে ওইদিন থেকে প্রার্থীদের প্রচারণা শুরু হয়ে যাবে। ভোটের ৩৬ ঘণ্টা আগে এ প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। এ সময় পর্যন্ত রাজনৈতিক দল সমর্থিত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিরামহীন প্রচারণা চালাবেন।
উল্লেখ্য, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ১০ ডিসেম্বর।