বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন নিউজপোর্টালের আদলে তৈরি ওয়েবসাইটের ছড়াছড়ি অন্তর্জাল জগতে। নামে সামান্য পার্থক্য থাকলেও সহজে বোঝার উপায় নেই সাধারণ পাঠকের। আসল ওয়েবসাইটের হুবহু কপি নিউজের পাশাপাশি সরকারবিরোধী বিভিন্ন প্রপাগাণ্ডা ও ভুয়া তথ্য সম্বলিত নিউজও প্রচার করা হতো এসব সাইটে।
প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমের নামে নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে পরিচালনার দায়ে কামাল হোসেন ওরফে জি এম কামাল (২৩) ও ডোমেইন হোস্টিং বিক্রেতা আল আমিনকে (৩০) আটক করেছে র্যাব-২। যাদের সঙ্গে ছাত্র শিবিরের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে কামালকে ও গাজীপুরের টঙ্গী থেকে আল আমিনকে বুধবার (২৮ নভেম্বর) দিনগত রাতে আটক করা হয়। এসময় কামালের মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে প্রথম আলো, নয়া দিগন্তসহ পাঁচটি ভুয়া সাইট জব্দ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান র্যাব-২ এর পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী।
তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রথম আলো, বিবিসি বাংলাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের হুবহু বেশকিছু নকল ওয়েবসাইট দেখা যায়। যেগুলোর নামে খুবই সামান্য পার্থক্য রয়েছে যাতে পাঠক সহজেই বিভ্রান্ত হবেন।
প্রথম আলোর একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে গিয়ে জানা যায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একটি কুচক্রী মহল বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নিউজ করে সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টায় লিপ্ত। এসব সাইটে সরকারবিরোধী প্রচারণার পাশাপাশি উদ্দেশ্যমূলক কোনো ব্যক্তির নামে অপপ্রচার করে আসছে। তারা আসল ওয়েবসাইট থেকে হুবহু নিউজ কপি করে আংশিক রেখে তার সঙ্গে মনগড়া তথ্য প্রকাশ করছিল।
‘বিভিন্ন ভুয়া ওয়েবসাইটের ডোমেইনের সূত্র ধরে মোহাম্মদপুর থেকে কামালকে আটক করা হয়। তার ব্যবহৃত ল্যাপটপ থেকে পাঁচটি ভুয়া ওয়েবসাইটের লিংক পাওয়া গেছে, যা হুবহু আসল ওয়েবসাইটের আদলে বানানো। কামালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডোমেইন ও হোস্টিং বিক্রেতা আল আমিনকে গাজীপুর থেকে আটক করা হয়।’
গত ২৪ নভেম্বর বিমানবন্দর এলাকা থেকে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী এনামুল হককে গ্রেফতার করা হয়। যার কাছ থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের আদলে ২২টি ভুয়া ওয়েবসাইট উদ্ধার করা হয়।
মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, সরকারবিরোধী প্রপাগাণ্ডা ছাড়ানোর উদ্দেশ্যে তারা এ অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। এছাড়া, সরকারবিরোধী লেখা প্রকাশিত হলে বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা বেশি লাইক ও শেয়ার করবেন, এর ফলে ফেসবুকেও বেশি আয় করার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। ইতোপূর্বে গ্রেফতার এনামুলের আয়ের ৭০-৭৫ শতাংশ শিবিরের ফান্ডে যেতো।
সবশেষ আটক দু’জনও বিভিন্ন সময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জনগণকে বিভ্রান্ত করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা নামি-দামি পত্রিকার সুনাম কাজে লাগানোর চেষ্টা করছিল।
এ চক্রের সঙ্গে অন্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।