মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামের ধর্ষণ হওয়া তরুণীর নিজস্ব আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিনা খরচে তার পক্ষে আইনি লড়াই চালিয়েছেন মানিকগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাদশাসহ দলমত নির্বিশেষে প্রায় অর্ধ-শতাধিক আইনজীবী। আর আসামিদের পক্ষে আদালতে জামিন চেয়েছেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মজিদ ফটো।
গতকাল মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাটুরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে মানিকগঞ্জ মুখ্য বিচারিক হাকিম ৭ নম্বর আদালতের বিচারক মোহাম্মদ গোলাম ছারোয়ারের এজলাসে আসামিদের হাজির করা হয়। আদালতে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বাদশাসহ আইনজীবী সমিতির প্রায় অর্ধ-শতাধিক আইনজীবী। আর আসামি পক্ষে শুধুমাত্র অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ ফটো।
নির্যাতিত তরুণীর অনুপস্থিতি এবং আসামিদের উপস্থিতিতে প্রায় এক ঘণ্টা চলে রিমান্ড শুনানি। নির্যাতিত তরুণীর পক্ষে আইনজীবীরা পুলিশের মাধ্যমে আসামিদের জামিন না মঞ্জুর করে কি কারণে এমন ঘটনা ঘটিয়ে পুলিশের সুনাম নষ্ট করেছে, তা জানতে ১০ দিনের রিমান্ড চান আইনজীবীরা। তবে আসামিদের রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন প্রার্থনা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী।
এ সময় এজলাসে দুই পক্ষের মধ্যে হইচই শুরু হয়। পড়ে বিচারক উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনে আসামি দুই পুলিশ সদস্যকে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিনা খরচে বাদীপক্ষের হয়ে আইনি সহায়তা দেয়া অর্ধ-শতাধিক আইনজীবীর পক্ষে নজরুল ইসলাম বাদশা গণমাধ্যমকে জানান, ধর্ষণের মামলাটি সম-সাময়িক একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। রাষ্ট্র এটাকে চাঞ্চল্যকর হিসেবে দেখছে। এমন ধর্ষণের ঘটনায় বারের সকল আইনজীবীদের মনে আঘাত লেগেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুইজন সদস্য এ মামলার আসামি এবং তাদের পক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত রাষ্ট্রকে শুনেছে এবং আসামিপক্ষের কথা শুনেছে। এরপর ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তিনি পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান আসামিরা পুলিশ সদস্য হওয়ার পরেও তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড চেয়েছেন।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম গণমাধ্যমকে জানান, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের অবস্থান পরিষ্কার। অপরাধী যেই হোক তাকে কোন ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ন্যায় বিচারের সার্থে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষভাবে মামলার তদন্ত করবেন। আসামিরা পুলিশের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও একজন সাধারণ আসামির মামলা যেভাবে তদন্ত করা হয়, এ মামলার তদন্ত ঠিক সেইভাবে করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হবে। ঢাকা টাইমস