গরু জব্দ করার বিষয়ে সংঘর্ষে জড়ানোর পর ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গুলিতে নিহতদের তিনজনের পরিবার ও আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের ওপর শুনানি জন্য আগামী রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আদেশ দিয়েছেন।
রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট তনয় কুমার সাহা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রিট আবেদনের ওপর শুনানির জন্য আজ (রোববার) নির্ধারিত দিনে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এক সপ্তাহ সময় আবেদন করেন। পরে আদালত আজ শুনানি না করে আগামী রোববার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, বিজিবি ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষের বিষয়ে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের বিষয়টি আমার খোঁজ নিতে হবে। তাই আজ আদালতের নিকট থেকে সময় নিয়েছি। ওই ঘটনায় যেহেতু একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয় এবং অনুসন্ধানের বিষয়ে করা রিটে যেহেতু প্রেন্ডিং তাই কথা বলতে চাই না।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তনয় কুমার সাহা। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক ও বিজিবির ৫০ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে রুলও চাওয়া হয়।
বিজিবির-৫০ অপারেশন থেকে নিরস্ত্র মানুষের উপর গুলিবর্ষণ করে তিনজন হত্যা এবং কমপক্ষে ২০ জনকে গুরুতর আহত করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং অপারেশনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না -এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
এছাড়া ১২ ফেব্রুয়ারি বিজিবির অপারেশনে সংশ্লিষ্ট বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নিদের্শনা দেয়া হবে না রিটে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
রিটে বলা হয়, দেশের সীমান্ত রক্ষা ও সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিজিবি। তাদের অর্পিত সেই দায়িত্ব রেখে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তারা গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন- হরিপুর উপজেলার রুহিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব উদ্দিন (৩৫), একই গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে সাদেক (৪৫) ও বহরমপুর গ্রামের নূরল ইসলামের ছেলে জয়নুল (১২)।