আবদুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ

মোবাইল কোর্টে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাদক আইন প্রয়োগের ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা

আবদুল্লাহ আল মামুন :

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ সরকারী গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ হতে। অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ পর্যন্ত পূর্বের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ কার্যকর ছিলো। ২৭ তারিখ হতে নতুন আইন কার্যকর হওয়ায় নতুন আইনের বিধান অনুযায়ী এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ সমুহের বিচার করবেন অতিরিক্ত দায়রা জজ পদমর্যাদার কর্মকর্তা কর্তৃক গঠিত ট্রাইব্যুনাল। তিনি না থাকলে দায়রা জজ মহোদয় এই ট্রাইব্যুনাল প্রিসাইড করবেন। সুতরাং,পূর্বের আইন অনুযায়ী জুডিসিয়াল বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাদক দ্রব্য আইনের কিছু অপরাধ The Code of Criminal Procedure,1898 এর দ্বিতীয় তফসিল অন্যযায়ী বিচার করতে পারতেন ( যেমন- ৫ বছর পর্যন্ত সাজা বা ২৯সি এর ক্ষমতাবলে CJM, CMM, ACJM, ACMM আরেকটু বেশি সাজার ধারাসমূহ)।

আগ্রহ উদ্দীপক বিষয় হলো ২০১৮ সালের আইন বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছেন এবং বিচারের দায়িত্ব দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালকে। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টকে বিচারের কোন ক্ষমতা দেওয়া হয়নি বিধায় জুডিসিয়াল বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টগুলোর বর্তমান কাজ হলো এই আইনের মামলা সমূহ বিচারের জন্য প্রস্ততের আগের ধাপগুলো অনুসরণ করে মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হলে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা। অনেকটাই শিশু আইন, ২০১৩ এর মতো।

এখন দেখার বিষয় হলো জুডিসিয়াল/মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগন নতুন মাদকদ্রব্য আইনে বিচারের ক্ষমতা হারানোয় নতুন আইনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগন কর্তৃক পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের কি হবে?

এই বিষয়ে নতুন আইনে বলা হয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পারবেন। অর্থাৎ জুডিসিয়াল বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগন বিচারের ক্ষমতা হারানো স্বত্ত্বেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার এখতিয়ার বা ক্ষমতা পান ভ্রাম্যমান আদালত আইন, ২০০৯ অনুযায়ী। মনে রাখার বিষয় হলো পূর্বের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ ভ্রাম্যমাণ আদালতের তফসীলে অন্তর্ভুক্ত ছিলো। আর নতুন আইনে মূল আইনেই ভ্রাম্যমান আদালতের ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে।

দেখা যাক ভ্রাম্যমান আদালত আইন, ২০০৯ কি বলছে?

মোবাইল কোর্টের ক্ষমতা
ধারা–৬। (১) ধারা ৫ এর অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা ধারা ১১ এর অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট আইন শৃংখলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনা করিবার সময় তফসিলে বর্ণিত আইনের অধীন কোন অপরাধ, যাহা কেবল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য, তাহার সম্মুখে সংঘটিত বা উদ্ঘাটিত হইয়া থাকিলে তিনি উক্ত অপরাধ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলেই আমলে গ্রহণ করিয়া অভিযুক্ত ব্যক্তিকে, স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে, দোষী সাব্যস্ত করিয়া, এই আইনের নির্ধারিত দণ্ড আরোপ করিতে পারিবেন।

A..”……তফসিলে বর্ণিত আইনের অধীন কোন অপরাধ, যাহা কেবল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য,….” প্রথম এই উপধারা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য অপরাধটি জুডিসিয়াল বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হতে হবে। অর্থাৎ জুডিসিয়াল বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর বিচার করার ক্ষমতার আওতাবহির্ভূত কোন বিষয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে পারবেন না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ বিচারের ভার দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালকে যিনি একজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার কর্মকর্তা।

এখন প্রশ্ন হলো- জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর ক্ষমতা না থাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর ক্ষমতা কি আছে?? থাকলে কি আছে??

চলুন পরের উপধারা দেখি–
(৩) তফসিলে বর্ণিত কোন আইনের অধীন কোন অপরাধ কোন্ আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বিচার্য হইবে তাহা উক্ত আইনে নির্ধারণ করা না থাকিলে, ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ২৯ এর সংশ্লিষ্ট দ্বিতীয় তফসিলের অষ্টম কলাম অনুযায়ী নির্ধারিত আদালত কর্তৃক উক্ত অপরাধ বিচার্য বলিয়া গণ্য হইবে এবং যদি অনুরূপ কোন অপরাধ বিচার করিবার এখতিয়ার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের না থাকে, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ, তফসিলে বর্ণিত আইনের অধীন অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও, এই আইনের অধীন আমলে গ্রহণ করিয়া দণ্ড আরোপ করিবার এখতিয়ার এই আইনের অধীন মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের থাকিবে না।

  1. “…..এবং যদি অনুরূপ কোন অপরাধ বিচার করিবার এখতিয়ার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের না থাকে, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ, তফসিলে বর্ণিত আইনের অধীন অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও, এই আইনের অধীন আমলে গ্রহণ করিয়া দণ্ড আরোপ করিবার এখতিয়ার এই আইনের অধীন মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের থাকিবে না।. “

এই উপধারা কি অস্পষ্ট? সুতরাং, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২০১৮ এর মাদকদ্রব্য আইন অনুযায়ী বিচারের ক্ষমতা হারানোয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য আইন ২০১৮ প্রয়োগের ক্ষমতা হারিয়েছেন।

তাহলে,পরের প্রশ্ন হলো জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা হারানোয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর কি ক্ষমতা অবশিষ্ট রয়েছে??এটার উত্তরও আছে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনে।

চলুন উপধারা ৪ এবং বিশেষ করে ৫ দেখি।

৪) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করিবার সময় যদি অনুরূপ কোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট এইরূপ মনে হয় যে, অপরাধ স্বীকারকারী ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট অপরাধ এমন গুরুতর যে, এই আইনের অধীন নির্ধারিত দণ্ড আরোপ করা হইলে উহা যথোপযুক্ত দণ্ডারোপ হইবে না, তাহা হইলে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে দণ্ড আরোপ না করিয়া তাহার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের ব্যবস্থা করিবেন।

(৫) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করিবার সময় যদি এইরূপ কোন অপরাধ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট এর সন্মুখে সংঘটিত বা উদ্ঘাটিত হয়, যাহা সেশন আদালত কিংবা অন্য কোন উচ্চতর বা বিশেষ আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বিচার্য, তাহা হইলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত অপরাধের সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এজাহার হিসাবে গণ্য করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করিবেন।

  1. উপধারা ৫ এতই স্পষ্ট যে আইনের কোন ছাত্র পড়ামাত্রই বুঝবেন কি বলা হয়েছে।এখানে ব্যাখ্যার কোন দরকার নেই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ বিচারের ভার অর্পণ করেছে এই উদ্দেশ্যে গঠিত “ট্রাইব্যুনাল ” কে। ট্রাইব্যুনালকে বিচারের ভার দেওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভ্রাম্যমান আদালত আইন ২০০৯ এর মাধ্যমে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন,২০১৮ প্রয়োগের এখতিয়ার হারিয়েছেন।তিনি যেটা করতে পারেন তার উত্তর উপধারা ৪ এ দেওয়া হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা কালে মাদক দ্রব্য সংক্রান্ত কিছু পেলে আলামত জব্দ,অভিযুক্ত আটক করবেন এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেবেন বা নিজেই এজাহারকারী হবেন।

এর বাইরে কোন ক্ষমতা কি আছে? আইনের স্বতসিদ্ধ নীতি হলো- এখতিয়ার বিহীন যে কোন কিছু সম্পূর্ণ বাতিল। এখতিয়ার না থাকলে সে আদেশ টিকবে কি করে বা এখতিয়ার ছাড়া প্রয়োগ হবে কি করে? মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাদকের জন্য মোবাইল কোর্ট করতে পারেন কি? ক্ষমতার ভুল প্রয়োগ অপরাধীকে মুক্তির ব্যবস্থা করে দিতে পারে কি? কারণ এখতিয়ার না থাকার বিষয় কোন ভাবেই curable নয়। এমনকি the code of criminal procedure,1898 এর মাধ্যমেও নয়। মূল আইনে কিভাবে এবং কেন এই ক্ষমতা দেওয়া হলো?

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতাই পান ভ্রাম্যমান আদালত আইন ২০০৯ অনুযায়ী। সুতরাং ঐ আইনের পদ্ধতি বা ক্ষমতায়ন অনুসরণ না করে নতুন আইনে এভাবে ক্ষমতা দেওয়া যাবে না। আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন অনুসরণ করতে হবে। তারপর ঐ আইন বলে অন্য কিছু। আর আগের আইন রহিত করে নতুন আইন অর্থাৎ আইন পুনঃ স্থাপিত হয়েছে বিধায় অবশ্যই নতুন আইনকে তফসিল ভুক্ত করা ছাড়া এভাবে একটি ধারায় ক্ষমতা দেয়া যাবে না। দেয়া হলেও ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন অনুযায়ী তা সাজা প্রদানের জন্য প্রয়োগ যোগ্য নয়।শুধু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদানের জন্য প্রয়োগ হতে পারে।

নতুন ছোট ছোট আইনগুলোতে জুডিসিয়াল বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের বিচারিক ক্ষমতা প্রদান না করে সরাসরি বিচারের ক্ষমতা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে দেওয়াও সম্পুর্ণ ভুল। কারণ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতার প্রথম শর্তই হলো অপরাধটি জুডিসিয়াল বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা বিচার্য হতে হবে। এখন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট যদি বিচারেরই ক্ষমতা না পান তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের মাধ্যমে তা প্রয়োগ করবেন? সুতরাং, এভাবে ক্ষমতা দেওয়া সম্পূর্ণ ভুল। তাদেরকে ক্ষমতা দিতে হলে আগে এখতিয়ার সৃষ্টি করতে হবে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯ এর অধীনে। আর মনে রাখা উচিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা এভাবে আইনের প্রয়োগ ব্যতিক্রম। কারন ভ্রাম্যমাণ আদালত, আইন অনুযায়ীই তারা সীমিত ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। এটা এই আইনের প্রস্তাবনা এবং ধারা ৬ এ উল্লেখ রয়েছে। “সীমিত” শব্দটি এই আইনে একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে এবং তার সুনির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে।

নতুন আইনে ট্রাইব্যুনালকে (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) বিচারের দায়িত্ব দেওয়ায় নতুন আইনের ছোট খাট অপরাধসহ সবই এই ট্রাইব্যুনাল দ্বারা বিচার্য হবে। প্রতিটি জেলায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজগন হত্যা মামলাসহ বড় অপরাধের মামলা, আপীল শুনানী, শিশু আদালতের দায়িত্বসহ বিপুল বিচার কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। নতুন আইনের একটি ভালো দিক হলো পূর্বের আইনের মামলাগুলোকে আগের মতো রাখা হয়েছে। অর্থাৎ ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এর অপরাধ যেগুলো তদন্তাধীন বা বিচারের জন্য রয়েছে সেগুলো সৃষ্ট ট্রাইব্যুনালে আসবে না। পূর্বের আদালতগুলোর কাছেই থাকবে এবং ও ভাবেই নিষ্পত্তি হবে। এটা করা হয়েছে আইন সবসময় prospective হওয়ার কারণে। সুতরাং, আর কিছু সময় পরেই নতুন আইনে দায়েরকৃত মামলাগুলো বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালে আসা শুরু হবে। ফলে, ট্রাইব্যুনালের উপর অর্পিত হবে বাড়তি বিচারিক দায়িত্ব। বর্তমান কাঠামো নিয়েই বিচার কাজ পরিচালনা করতে হবে বিধায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হতে পারে। সদাশয় সরকার মাদকদ্রব্য এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। মাদক যেভাবে সমাজ, পরিবার, রাষ্ট্রকে শেষ করে দিচ্ছে এটি অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করি। পুলিশ বাহিনীসহ অন্যান্য আইন শৃংখলা বাহিনী প্রতিনিয়ত মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছেন।সফল হচ্ছেন। আমরা আশা করতে পারি সদাশয় সরকার বিদ্যমান কাঠামোর সাথে সংগতি রেখে ৬৪ জেলায় ৬৪ টি এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩/৪ টি করে পৃথক ট্রাইব্যুনালের পদ সৃষ্টি করবেন যাতে বিদ্যমান আদালত ব্যবস্থার উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি না হয় এবং মাদকের মামলা আইন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নিষ্পন্ন করা সম্ভব হয়।

জনবলসহ পৃথক ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি করা হলে অবশ্যই ট্রাইব্যুনাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিচার নিষ্পন্ন করতে সক্ষম হবেন বলে মনে করি। সদাশয় সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছেন আমরা তা সর্বান্তকরণে সমর্থন করি।

লেখক : অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।