২৫ বছর নিম্ন আদালতে প্র্যাকটিসরত আইনজীবীদের শুধুমাত্র সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে হাইকোর্ট বিভাগে প্র্যাকটিসের অনুমতি প্রদানের নতুন বিধান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না – তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে আজ সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আবেদনের পক্ষে আজ আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া।
শুনানি শেষে আদালতের রুল জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, রুলে সাতজনকে বিবাদী করা হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব, বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, বার কাউন্সিল সচিব, বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান, সংসদ সচিবালয় সচিব এবং বার কাউন্সিল রুল অ্যান্ড পাবলিকেশন কমিটির চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটে আইনের এই বিধান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৯(১) ও অনুচ্ছেদ ২৭ এর পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে হাইকোর্টে নতুন আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির জন্য করা নতুন এ বিধান বাতিলের আবেদনও জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বাংলাদেশ লিগ্যাল প্রাকটিশনার’স অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার ১৯৭২ দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। সম্প্রতি আইনটির একটি বিধানে সরকার সংশোধনী এনেছে। বার কাউন্সিলের আগের বিধান অনুসারে নিম্ন আদালতে দুই বছর প্র্যাকটিসের পর হাইকোর্টের আইনজীবী হতে প্রার্থীকে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হতো। কিন্তু, সরকারের নতুন সংশোধনীতে বলা হচ্ছে, নিম্ন আদালতের আইনজীবীদের ২৫ বছরের প্র্যাকটিসের অভিজ্ঞতা থাকলে তাকে আর হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তিতে লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে না। শুধুমাত্র সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হলেই তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করতে পারবেন।
বাংলাদেশ লিগ্যাল প্রাকটিশনার’স অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার ১৯৭২ এর ৪০ (৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার ওই সংশোধনী আনে। রুলসটির ৪০(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বার কাউন্সিল কোনও রুলস না করা পর্যন্ত এই অনুচ্ছেদের অধীনে সরকার অবশ্যই রুলস তৈরির ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবে।
গত ৩০ জুলাই প্রকাশিত সরকারি গেজেটের নতুন রুলসে বলা হয়েছে, আইন বিষয়ে ডিগ্রিধারী কোনও ব্যক্তি বাংলাদেশের যে কোন নিম্ন আদালতে একাধারে ২৫ বছর আইন পেশায় নিয়োজিত থাকলে তাকে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তিতে লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে না, তবে সংশ্লিষ্ট বোর্ডে ইন্টারভিউয়ের জন্য আবেদন করতে হবে।