প্রতারণা মামলায় নিজেকে সাজামুক্ত রাখতে আরেক প্রতারণা করেন তিনি। নিজের বদলে আরেকজনকে আদালতে আত্মসমর্পণ করান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এক প্রতারণা মামলার সাজা থেকে বাঁচতে চেয়ে আরেক প্রতারণার মামলায় কারাগারে যান। তাঁর নাম মোজাম্মেল হক।
চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে গতকাল মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার শুরু ২০১৫ সালের ২৩ আগস্ট। আনোয়ারার মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে আদালতে মামলাটি করেছিলেন রাউজানের মো. রফিক। পাওনা টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মামলাটি হয়েছিল। এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান মোজাম্মেল। পরে জামিনে এসে তিনি পলাতক হয়ে যান। এই মামলায় গত বছরের ২২ নভেম্বর আদালত মোজাম্মেলকে ছয় মাসের সাজা দেন। একই সঙ্গে আদালত পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি।
গতকাল মোজাম্মেল নিজে আদালতে আত্মসমর্পণ না করে তাঁর আত্মীয় দিদারুল আলমকে হাজির করান। দিদারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল হাজির হওয়ার জন্য তাঁকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আর হাজির হলেই জামিন পাবেন। কারাগারে যেতে হবে না। এই সরল বিশ্বাসে হাজির হন মোজাম্মেল সেজে দিদার। নিজেকে সন্দেহমুক্ত রাখতে পোশাক–আশাকও পরেন কেতাদুরস্ত। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দিদারকে (মোজাম্মেল সেজে আসা) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামির কাঠগড়ায় থাকা দিদার আদেশটি শুনে কান্না করতে থাকেন। তিনি আদালতকে বলতে থাকেন, ‘স্যার আমি দিদার। মোজাম্মেল নই। মোজাম্মেল বারান্দায় আছেন। আমি আসামি না।’
এই বক্তব্য শোনার পর আদালত প্রকৃত আসামি মোজাম্মেলকে হাজির করতে নির্দেশ দেন। আদালতের বারান্দা থেকে মোজাম্মেলকে হাজির করা হলে তিনি নিজেও এই ঘটনা স্বীকার করেন।
দুজনের বক্তব্য শোনার পর আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য আদালত মামলার নির্দেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী বখতিয়ার উদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন। মামলায় মোজাম্মেল ও দিদারকে আসামি করা হয়। পরে দুজনকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত আসামির আইনজীবীকে ছয় দিনের মধে৵ কারণ দর্শানোর জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মোজাম্মেলের আইনজীবী ছিলেন আবিদ হোসেন। তিনি বলেন, মোজাম্মেল নামের এক ব্যক্তি এসে আত্মসমর্পণ করার কথা বলেন। পরে আদালতে জানতে পারেন তিনি মোজাম্মেল নন।