নানাজনকে ফোন করে তারা হাতিয়ে নিত মোটা অঙ্কের টাকা। আর এর জন্য তারা গড়ে তোলে একটি চক্র। সেই চক্রে রয়েছে একজন দয়াল বাবা। তার সঙ্গে রয়েছে জিনের বাদশা। প্রতারণা করতে তারা চারটি সিম কেনে এক ভিক্ষুকের নামে। সিমগুলো ব্যবহার করে হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করা হতো। সবশেষ এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর নামে চাঁদা চেয়ে ফোন করে ব্যবসায়ীকে। অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধানে নামে র্যাব। আর সংস্থাটির জালে ধরা পড়ে চক্রটি।
বুধবার রাতে নরসিংদীর বান্টিবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রটির তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা হলেন- চক্রের মূলহোতা সৈয়দ আকতার হোসেন লিটন, মুকলেসুর রহমান ওরফে দয়াল বাবা ও দুলাল ওরফে দুলাল পাগলা।
র্যাবের ভাষ্য, চক্রটি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। আর প্রতারণা করে ধরা না পড়তে তারা একজন ভিক্ষুকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করে চারটি সিম দিয়ে এই কাজ করত।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকাটাইমসকে এই তথ্য নিশ্চিত করে র্যাব-১১ অধিনায়ক কাজী শামশের উদ্দিন জানান, সোমবার মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত পরিচয়ে মোবাইলে এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবী করা হয়েছে বলে অভিযোগ পায় র্যাব। র্যাব জানতে পারে ওই একই নম্বর ব্যবহার করে অনেক ব্যবসায়ী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছেও চাঁদা চাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই বিকাশের মাধ্যমের চাঁদার টাকা পরিশোধও করেছেন। আবার অনেকে ভয়ে অসুস্থ হয়েছেন। কেউ নিরাপত্তা চেয়ে থানায় ডায়েরি করেছেন।’
‘অভিযোগের তদন্তে চক্রটিকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় র্যাব। বুধবার আড়াইহাজার থানার বান্টিবাজার থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত চারটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।’
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, এই চক্রের মূলহোতা আকতার হোসেন লিটন। তার বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার আমগ্রামে। প্রতারণা করাই তার মূল পেশা। কয়েকবছর আগে গাজীপুরের কোনাবাড়ির এক মাজারের ফকির মোখলেসুর ওরফে দয়াল বাবা ও দুলাল পাগলার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা একত্রিত হয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণা করত এবং মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করত। সেই টাকা গুরুদক্ষিণা হিসেবে দয়াল বাবাকেও দেওয়া হত।
ধরা না পড়তে ভিক্ষুকের নামে সিম কেনা প্রসঙ্গে কাজী শামশের উদ্দিন, ‘তিনমাস আগে দয়াল বাবার নির্দেশে দুলাল গাজীপুরের চৌরাস্তায় আজিজ নামের এক ভিক্ষুকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করে চারটি সিম কেনে।’
‘এসব সিম দিয়ে ফোন করার পাশাপাশি বিকাশ ও নগদ একাউন্ট খোলা হয়। এসব নাম্বার ব্যবহার করে প্রতারণার টাকা আদায় করত তারা।’