একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধেরর মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের (৬৯) বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের জন্য আগামী ২৫ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ সোমবার (৪ মার্চ) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আদালতে প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম। আর আসামি ওয়াহিদুল হকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার।
পরে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ওই অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ২৫ মার্চ দিন ঠিক করে দিয়েছেন।’
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর আসামি ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করে প্রসিকিউশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্ত শুরু করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়। এ মামলায় মোট ৫৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন ওয়াহিদুল হক রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৯ ক্যাভেলরি রেজিমেন্টের অ্যাডজুটেন্টের দায়িত্বে থেকে চারটি সামরিক জিপে মেশিনগান লাগিয়ে গুলিবর্ষণ করে রংপুর সেনানিবাস সংলগ্ম এলাকায় ৫ থেকে ৬শ’ স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের হত্যা, গণহত্যা ও অসংখ্য মানুষকে আহত করে। গুলিবর্ষণ করে সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। হত্যা, গণহত্যার শিকার মানুষের লাশে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে কয়েকটি গর্তে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে আসামি ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বারিধারার বাসা থেকে ওয়াহিদুল হককে গ্রেফতার করা হয়।
পরে ২৫ এপ্রিল তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে বিচারপতি আমির হোসেনের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আসামি ওয়াহিদুল হককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।