নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে চরমাকসুমুল গ্রামের এক গৃহবধূকে ‘ধর্ষণের’ পর বিষপানে তার আত্মহত্যার ঘটনায় হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সোমবার (৪ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী মুনতাসীর মাহমুদ রহমান। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
আবেদনে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার ওই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এবং ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ মীমাংসার নামে তথাকথিত সালিশী বৈঠক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।
‘সুবর্ণচরে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এ আইনজীবী রিট করেন।
রিটে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সচিব, নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক, সুবর্ণচরের ওসি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বিবাদী করা হয়েছে।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়, নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে পরিবারের দাবি, স্বামীর সঙ্গে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন গৃহবধূ পলি আক্তার। পরে বিষপান করে আত্মহত্যা করেন তিনি।
শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে ইউনিয়নের চর মাকসুমুল গ্রামে ধর্ষণের ঘটনার পর শনিবার (২ মার্চ) সকালে ওই গৃহবধূ বিষপান করেন। পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত গৃহবধূর পারিবারিক সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে একই এলাকার আলাউদ্দিন ঘরে ঢুকে পলি আক্তারকে ধর্ষণ করে। এরমধ্যে তার স্বামী সোহাগ বাড়িতে এসে স্ত্রীর চিৎকার শুনতে পান এবং বিষয়টি বুঝতে পেরে আশপাশের লোকজন ডেকে আলাউদ্দিনকে আটক করে।
এক পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের নুরু মেম্বারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ওই রাতেই ধর্ষককে মারধর এবং ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেন। পরদিন সকালে ওই গৃহবধূ বিষপান করলে তাকে পরিবারের লোকজন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।