এশিয়ার বৃহত্তম আইনজীবী সমিতি ঢাকা বারের ২০১৯-২০ কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এর মাঝে ১ ঘণ্টা বিরতি থাকবে। এরপর শুরু হবে ভোট গণণা। ভোট গণণা শেষে ঘোষণা করা হবে ফলাফল।
ভোট গ্রহণের বিষয় মঙ্গলবার (৫ মার্চ) নির্বাচন কমিশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দু’দিনব্যাপি নির্বাচনে প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। পরে বৈরী আবহাওয়া ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি থাকায় গত বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন। প্রথম দিনের ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনের সাধারণ সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির (বার) ২০১৯-২০ কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। মাঝে এক ঘণ্টা বিরতি ছিল। প্রথম দিনে ভোট দিয়েছেন ৪ হাজার ৬৪৬ জন। এর মধ্যে চারটি ভোট নষ্ট হয়েছে। এবার মোট ভোটার ১৭ হাজার ৮৯৭ জন।
নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বারের সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান বাদল। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে মোট ২৭টি পদের বিপরীতে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের দুইজন করে ৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৪ হাজার ৬৮৪ জন সদস্যের মধ্যে ১৭ হাজার ৮৯৭ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।’
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার বিষয়ে উভয়পক্ষই আশাবাদী। এ সম্পর্কে সাদা প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী নজিউল্ল্যাহ হিরু বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। আশা করছি আমরা অধিকাংশ পদেই জয়লাভ করব।’
সাদা প্যানেলে সভাপতি গাজী শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান খান রচি।
এছাড়া অন্যান্য সম্পাদকীয় পদের প্রার্থীরা হলেন- মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান (সিনিয়র সহ-সভাপতি), মো. জাহাঙ্গীর হোসেন দুলাল (সহ-সভাপতি), আব্দুল জলিল আফরাদ-কবির (ট্রেজারার), মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা (সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক), মোহাম্মাদ ওমর ফারুক আসিফ (সহ-সাধারণ সম্পাদক), মো. আতাউর রহমান খান রুকু (গ্রন্থাগার সম্পাদক), শায়লা পারভীন পিয়া (সাংস্কৃতিক সম্পাদক), মো. জাহিদুল ইসলাম কাদির (দফতর সম্পাদক), মো. উজ্জ্বল মিয়া (ক্রীড়া সম্পাদক) ও হুমায়ুন খন্দকার টগর (সমাজকল্যাণ সম্পাদক)।
এই প্যানেলেন সদস্য পদের প্রার্থীরা হলেন- আয়েশা বিনতে আলী, এএইচএম শফিকুল ইসলাম মোল্লা সোহাগ, হোয়াত আল মাহমুদ জিকু, কাওছার হাসান, মো. সাব্বির হাসান, মো. বাহারুল ইসলাম বাহার, মো. হাসান আকবার আফজাল, মো. ইব্রাহিম হোসেন, মো. জুয়েল শিকদার, মো. মাসুম মিয়া, মো. মাসুম মৃধা, সাইফুল ইসলাম, সৌরভ হোসেন, তানভীর আহমেদ সজিব ও তুষার ঘোষ।
অপরদিকে নীল প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। তাই আশা করছি, গতবারের চেয়ে এবার ফলাফল অনেক ভালো হবে।’
নীল প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. হোসেন আলী খান হাসান।
নীল প্যানেলের অন্যান্য সম্পাদকীয় পদের প্রার্থীরা হলেন- আব্দুস সালাম দেওয়ান (সিনিয়র সহ-সভাপতি), এ আর মিজানুর রহমান (সহ-সভাপতি), মো. লুৎফর রহমান আজাদ (ট্রেজারার), মো. নিহার হোসেইন ফারুক (সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক), মো. সাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া ছোটন (সহ-সাধারণ সম্পাদক), মো. জিয়াউল হক জিয়া (গ্রন্থাগার সম্পাদক), মোরশেদা খাতুন শিল্পী (সাংস্কৃতিক সম্পাদক), মো. জুলফিকার আলী হায়দার জীবন (দফতর সম্পাদক), মো. মনিরুল ইসলাম আকাশ (ক্রীড়া সম্পাদক) ও মাহবুব হাসান রানা (সমাজ কল্যাণ সম্পাদক)।
এছাড়া একই প্যানেল থেকে সদস্য পদে লড়ছেন আজহার উদ্দিন রিপন, কাজী রাওশান দিল আফরোজ, এম আর রাসেল, মো. বাবুল আক্তার, মো. ইব্রাহিম খলিল, মো. ইকবাল মাহমুদ সরকার, মো. মেহেদী হাসান জুয়েল, মো. রাসেদুল ইসলাম রাসেল, মোহাম্মাদ ইব্রাহিম (স্বপন), মোহাম্মাদ মোস্তফা কামাল, মো. ইয়াছিন মিয়া, মোছা. ফারহানা আক্তার লুবনা, নজরুল হক সুভা, শাহীন সুলতানা খুকি ও সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া জাদু।
উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ মেয়াদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল জয় লাভ করে। ২৭টি পদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদকসহ ১৪টি পদে জয়ী হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা। অপরদিকে সভাপতিসহ ১৩টি পদে জয় পান বিএনপি-জামায়াত সমর্থিতরা।