লিফটটি অতি পুরনো। এর ধারণক্ষমতা ছিল কম। কিন্তু এতে জোর করে অতিরিক্ত যাত্রী উঠে যায়। এই অতিরিক্ত যাত্রী ওঠায় পাঁচতলা থেকে ছিঁড়ে পড়ে লিফটটি।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কোর্টের পুরনো ভবনের লিফট ছিঁড়ে পড়ার ঘটনায় করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে কাউকে দোষী বা শাস্তি দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, লিফটটি ছিল অতি পুরনো। এর ধারণক্ষমতা ছিল কম। ধারণক্ষমতার চেয়ে যাত্রী উঠে বেশি। লিফটম্যানের বাধা সত্ত্বেও দু-একজন জোর করে লিফটে উঠে যায়। লিফটটি রশিদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান রক্ষণাবেক্ষণ করত। এর মালিক বজলুর রহমান। এই লিফটসহ আরেকটি লিফটের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারের গণপূর্ত বিভাগ প্রতি বছর রশিদ এন্টারপ্রাইজকে ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা প্রদান করে।
তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ হেলাল চৌধুরী। তিনি বলেন, লিফটটি কী কারণে ছিঁড়ে পড়ে তার তদন্ত করেছি আমরা। তদন্তে কারণ হিসেবে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার বিষয়টি উঠে এসেছে। কাউকে শান্তি অথবা দোষী করার বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবেন।
অপরদিকে লিফট ছিঁড়ে পড়ার দিনই জেলা ও দায়রা জজের নাজির কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেছিলেন। জিডির বিষয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) মশিউর রহমান বলেন, লিফট ছেঁড়ার ঘটনায় যে জিডি হয়েছে তার তদন্ত চলছে। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত ৭ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজকোর্ট ভবনের লিফট ছিঁড়ে ১২ জন আহত হওয়ার ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ হেলাল চৌধুরী। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায়কে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। সদস্য সচিব করা হয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক উৎপল ভট্টাচার্যকে। এছাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আফরাফুজ্জামান ও গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-৩ এর উপ-বিভাগীয় প্রকোশলী কাজী মাশফিক আহমেদকে কমিটির সদস্য করা হয়।
উল্লেখ্য, ৭ মার্চ সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পুরনো ভবনের পাঁচতলা থেকে একটি লিফট ছিঁড়ে ১২ জন আহত হন।