বছরে দুটি পরীক্ষা, শিক্ষানবিশ ও নবীন আইনজীবীদের উৎসাহ ভাতা, ২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিখিত ও মৌখিক (এমসিকিউ) পরীক্ষা সম্পন্ন করে ফলাফল প্রকাশ এবং যুগপোযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণসহ পাঁচ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় ৫৫৯ জন শিক্ষানবিশ আইনজীবীর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত কপি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান, ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান, লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান ও এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান বরাবর এ স্মারকলিপি জমা দেয়া হয়েছে।
এলএলবি ডিগ্রিধারী ৫৫৯ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের পক্ষ থেকে বার কাউন্সিলে দ্রুত নিবন্ধন পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন শেখ মাহদী হাসান, মো. বাবুল হোসেন, মো. জুম্মন শিকদার, মো. বায়েজীদ ও আরাফাত সিদ্দিকী।
বার কাউন্সিল বরাবর পাঠানো স্মারকলিপিতে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা জানান, ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে মাত্র একটি পরীক্ষা বার কাউন্সিল সফলভাবে গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে। তবে ২০১৩ সালের পূর্বে দুটি পরীক্ষা গ্রহণের অসংখ্যা নজির রয়েছে। বার কাউন্সিল হয়তো অনিবার্য কারণবশত গত ২০১৭ সালের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে দীর্ঘ এক বছর ৬ মাস সময়ক্ষেপণ করছে।
তাদের দাবি তাদের বয়স আনুমানিক ২৮ থেকে ৩০ বছর। তারা তাদের পরিবারে মা-বাবার ‘বোঝা’। এই পরস্থিতিতে তাদের মনে জন্ম নিয়েছে হতাশা, ভেঙ্গে যাচ্ছে হাজারও সোনালী স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ। তাই বাংলাদেশ বার কাউন্সিল যদি আগের মতো দুইবার পরীক্ষা গ্রহণ করে তাহলে তারা ইতোমধ্যে সদস্যপদ লাভ করতেন।
বছর মেয়াদী কয়েক হাজার এলএলবি ডিগ্রিধারী বার কাউন্সিলে ‘অন্তর্ভুক্তি পরীক্ষায়’ পাস করে অ্যাডভোকেট হিসেবে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে আইন পেশায় আছেন। কেউ কেউ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিচারক হিসেবে কর্মরত আছেন।
তারা জানান, পাস করা এলএলবি ডিগ্রিধারীদের অর্থ উপার্জনের হাতছানি দেয়, সেখানে বার কাউন্সিলের অ্যাডভোকেট অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় নিবন্ধন সনদ নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়, তা হলে আমরা বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পাই না। বাঁচার তাগিদে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার জন্য পাচঁ দফা দাবি জানান তারা।
শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের পাঁচ দফা দাবি হলো–
- অবিলম্বে বার কাউন্সিল পরীক্ষা ২০১৯।
- ২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিখিত ও মৌখিক (এমসিকিউ) পরীক্ষা সম্পন্ন করে ফলাফল প্রকাশ।
- প্রতি বছর কমপক্ষে দুটি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে।
- শিক্ষানবিশ ও নবীন আইনজীবীদের যগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং
- শিক্ষানবিশ ও নবীন আইনজীবীদের উৎসাহ ভাতা দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বিনিত অনুরোধ, আইন পেশার ভবিষ্যৎ মানদণ্ড বজায় রাখা ও আইন পেশার মান সমুন্নত রাখতে বিজ্ঞ সিনিয়ররা এসব দাবি মেনে নিয়ে শিগগিরই শিডিউল ঘোষণা করবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষানবিশ আইনজীবী গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৩ সালের আগে আইনের ডিগ্রিধারীরা নিয়মিত বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে সনদ পরীক্ষায় নিবন্ধনপ্রাপ্ত হয়ে দ্রুত আইন পেশায় অংশগ্রহণ করতে কোনো অসুবিধা ছিল না। এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না তাও তাদের অজানা। এ অবস্থায় বেকারত্ব আর পরিবারে বোঝা হয়ে হতাশায় জীবন যাপন করতে হচ্ছে। তাই আমরা এসব সমস্যা সমাধান হিসেবে বছরে দুইবার পরীক্ষা এবং উৎসাহ ভাতা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।