মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীর ব্যথাহীন মৃত্যুর অধিকার নেই বলে রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির মিসৌরী অঙ্গরাজ্যে একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর করা মামলায় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত এমন রায় দিয়েছেন। খবর বিবিসি, সিএনএন।
১৯৯৬ সালে সাবেক প্রেমিকাকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা এবং একই সাথে সেই প্রেমিকার নতুন প্রেমিক ও ছয় বছর বয়সী ছেলেকে হত্যার দায়ে ৫০ বছর বয়সী রাসেল বাকলোকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। রাসেল বাকলো তাকে লিথাল ইনজেকশন (যন্ত্রণাহীন বিষ ইনজেকশন) দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করে বরং গ্যাস প্রয়োগের অনুরোধ জানান।
তিনি দাবি করেন, মস্তিষ্কের বিরল অসুখের কারণে তার গলা, ঘাড় ও মুখে রক্তযুক্ত টিউমার হয়ে থাকে। ফলে লিথাল ইনজেকশন প্রয়োগে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলে তাকে অনেক বেশি কষ্ট পেয়ে মৃত্যুবরণ করতে হবে।
এই মামলায় আদালত এক বিরল রায়ে বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর ব্যথাহীন মৃত্যুর অধিকার নেই।’
আদালত বলেছেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কার্যকর করার বিষয়টি বিলম্বিত করার কৌশল হিসেবেই আসামী এই অসুখটিকে ব্যবহার করছেন।
আদালত আরও বলেছেন, কি প্রক্রিয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলে তার কষ্টের ঝুঁকি কম হবে সেটি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বাকলো।
তবে মামলা চলাকালীন বাকলো যুক্তি তুলে ধরেছিলেন, মার্কিন সংবিধানে নিষ্ঠুর সাজা আইনত অবৈধ। তার ভাষায়, রাষ্ট্র যে পদ্ধতি অবলম্বন করতে চায় তা নিষ্ঠুর সাজার সমতুল্য।
২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিয়োগ দেয়া বিচারক নিল গরসাচ বলেন, ‘মার্কিন সংবিধানে নিষ্ঠুর কায়দায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা অবৈধ করা হলেও তাতে ব্যথাহীন মৃত্যুর নিশ্চয়তা নেই।’
তিনি বলেন, ‘মিশোরির জনগণ, মি. বাকলোর অপরাধের ভুক্তভোগীদের আরো বেশি প্রাপ্য।’
গত বিশ বছর ধরে ঝুলে আছে রাসেল বাকলোর মৃত্যুদণ্ড। তবে এই রায়ের ফলে সেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ব্যাপারে আর কোন বাধা রইলো না।