রূপালী ব্যাংকের ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আবু বোরহান চৌধুরীকে ধরতে প্রয়োজনে রেড অ্যালার্ট জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশপাশি ১৫ এপ্রিলের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।
ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে আজ রোববার (৭ এপ্রিল) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পুলিশের আইজি, র্যাবের ডিজি, ডিএমপি পুলিশ কমিশনার ও সব আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।
দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাসান এম এস আজিম। আপিলকারী এইচ এম বাহাউদ্দীনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. রিজাউল ইসলাম রিয়াজ ও তিন ব্যাংক কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ ওবায়দুর রহমান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, যাবাজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হলেন এভারেস্ট হোল্ডিং অ্যান্ড টেকনোলজিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবু বোরহান চৌধুরী।
গত ২৯ জানুয়ারি আজীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি এভারেস্ট হোল্ডিং ও টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম বাহাউদ্দীনের জামিন শুনানির সময় তিন ব্যাংক কর্মকর্তার অব্যাহতির বিষয় হাইকোর্টের নজরে আসলে রূপালী ব্যাংকের ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় অভিযোগপত্র থেকে বাদ পড়া তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব করা হয়।
আদালতের আদেশে আজ এই তিন কর্মকর্তা রূপালী ব্যাংক স্থানীয় কার্যালয়ের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক বর্তমানে মহাব্যবস্থাপক এস এম আতিকুর রহমান, সহকারী মহাব্যবস্থাপক বর্তমানে উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী ও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আবদুস সামাদ সরকার হাজির হন। এ মামলায় শুনানির সময় উপরোক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গ্রাহকের মিথ্যা, ভুয়া সনদ যাচাই না করে পরস্পর যোগসাজশে বিক্রীত জমি ও ফ্ল্যাট অবিক্রীত হিসেবে প্রদর্শন করে এবং বন্ধক দেখিয়ে ঋণপ্রস্তাবের মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা গ্রাহকের নামে বিতরণ করে আত্মসাৎ করেন। দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে আসামি করে রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন।
পরে তদন্ত করে ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দিয়ে এভারেস্ট হোল্ডিং অ্যান্ড টেকনোলজিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবু বোরহান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম বাহাউদ্দীন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক উপপরিচালক বর্তমানে পরিদর্শক মো. আবদুল কুদ্দুস খানকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলায় বিচারিক আদালতে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আর অভিযোগ গঠন করা হয় ২০১৪ সালের ২৫ জুন। মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ করে বিচার শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল এভারেস্ট হোল্ডিং অ্যান্ড টেকনোলজিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন। অপর আসামিদের খালাস দেন।