ফরিদপুরে জাল দলিল করার দায়ে সাব রেজিস্ট্রারসহ আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের হাকিম মো. মতিয়ার রহমান মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এ রায় দেন।
জাল দলিল রেকর্ড করার দায়ে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়ার সহকারী সাব রেজিস্ট্রার রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এ ছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাঁকে। জরিমানা অনাদায়ে তাঁকে আরও ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভুয়া মালিক সেজে জমি বিক্রি করার দায়ে সভারঞ্জন রত্ন, তাঁর দুই ভাই রমেশ রত্ন ও সুনীল রত্ন এবং জমির ক্রেতা প্রেমানন্দ মল্লিককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাঁদের প্রত্যেককে আরও ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
জাল দলিলের সাক্ষী নূরুজ্জামান হাওলাদার, আলী আকবর শেখ ও শনাক্তকারী বিপ্লব রত্নকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি মজিবুর রহমান বলেন, কোটালীপাড়ায় ৩২ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন হরিপদ দত্ত। কিন্তু সেই জমি ভুলক্রমে নারায়ণ ভট্টাচার্য ও তাঁর ভাই চিত্ত ভট্টাচার্যের নামে রেকর্ড হয়। তাঁরা দুজন বাংলাদেশে না থাকায় জমির মালিকানা চলে যায় হরিপদ দত্তের নাতি শ্রীনাথ রত্নের মেয়ে সবিতা রানী রত্নের দখলে। কিন্তু লাভবান হওয়ার আশায় তথ্য গোপন করে জাল কাগজপত্র বানিয়ে সভারঞ্জন, রমেশ এবং সুনীল সেই জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে দেন প্রেমানন্দ মল্লিকের কাছে। এই জাল দলিলের সাক্ষী হন নূরুজ্জামান হাওলাদার ও আকবর আলী শেখ, শনাক্তকারী হন বিপ্লব রত্ন এবং ভুয়া দলিল রেজিস্ট্রি করেন সাব রেজিস্ট্রার রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস।
এ ব্যাপারে ২০১৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল হাকিমের আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন সবিতা রানী। পরে সকল তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এ রায় দেন।