কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মাদকাসক্ত বন্দীদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
জানা গেছে, বন্দী মাদকসেবীদের জন্য কারাগারের অভ্যন্তরে মাদক থেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে প্রতিদিন সকাল–বিকেল দুই দফায় মাদকসেবীদের অনুপ্রেরণা, মাদক সেবনের কুফল ও ভয়াবহতা তুলে ধরে সচেতনতা বৃদ্ধি ও তাঁদের মানসিক এবং শারীরিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া কারাগারের অভ্যন্তরে বন্দীদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে অত্যাধুনিক শারীরিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য ব্যায়ামাগার। এখান থেকে প্রতিদিন শতাধিক বন্দী সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্যায়ামাগারে গিয়ে শরীরচর্চা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কারাবন্দী বলেন, তাঁরা গাঁজা, ফেনসিডিল ও ইয়াবা সেবন করতেন। কারা কর্তৃপক্ষ এই অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরিয়ে আনতে প্রতিদিন সকাল–বিকেল তাঁদের শারীরিক ও মানসিকভাবে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করেছে। শরীর গঠন ও সুস্থভাবে জীবনযাপনের জন্য ব্যায়ামাগারের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া কারাগারে একটি কক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে বন্দীরা শিল্পচর্চা করতে পারেন। এতে তাঁরা উপকৃত হচ্ছেন এবং জীবন সম্পর্কে নতুন ধারণা লাভ করছেন।
শারীরিক শিক্ষা কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল বলেন, ‘দুই মাস আগে আমাদের এ ব্যায়ামাগারটি কারা কর্তৃপক্ষ চালু করেন। এখানে প্রতিদিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তিন দফায় মাদকসেবী ও অন্য কারাবন্দীরা এসে শরীরচর্চা করছেন এবং তাঁরা সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে আগামী জীবনযাপনের জন্য তৈরি হচ্ছেন। যাতে কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে তাঁদের পরিবার–পরিজন নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে পারেন। প্রতিদিন দুই দফায় শতাধিক মাদকসেবীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতাসহ শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কারাগারে বন্দী মাদকাসক্তদের স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে দুই মাস আগে কারাগারের অভ্যন্তরে মানসিক ও শারীরিক চিকিৎসা প্রদানসহ তাঁদের ব্যায়ামাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিজ্ঞ চিত্রশিল্পীদের তত্ত্বাবধানে বন্দীদের শিল্পচর্চার জন্য চিত্রাঙ্কন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, এখানে যাঁরা মাদকাসক্ত বন্দী রয়েছেন, তাঁরা যেন এখান থেকে মুক্তি পেয়ে সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারেন এবং নিজেরা পরনির্ভরশীল না হয়ে স্বাবলম্বী হতে পারেন।’ প্রথম আলো