ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিল আইনজীবীদের মধ্যেই। আইনজীবীদের মধ্যে কেউ কেউ দাবি করছেন এই অভিযোগ তদন্তে তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মেনে অভ্যন্তরীণ কমিটি গড়ার প্রয়োজন। আবার কেউ বলছেন, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এই ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগের তদন্তের জন্য বিচারবিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার
সম্প্রতি ভারতীয় প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন কর্মী। এ নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে চায়ের আড্ডা সব জায়গাতেই চলছে কানাঘুষা। যদিও ইতোমধ্যে এই অভিযোগ শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি। সেই বেঞ্চে তিনি ছাড়াও রয়েছেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি সঞ্জীব খন্না।
অবশ্য এই বিষয়ে বিচারবিভাগীয় নির্দেশ দেওয়ার দায়িত্ব বিচারপতি মিশ্র ও বিচারপতি খন্নাকে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে শুনানির জন্য গঠিত বেঞ্চে তাঁরই উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ইন্দিরা জয়সিংয়ের মতো প্রবীণ আইনজীবীরা।
এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতির পাশে দাঁড়ানোর জন্য বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার সমালোচনা করেছেন তাদেরই দুই সদস্য। বিজেপি মুখপাত্র ও আইনজীবী গৌরব ভাটিয়া এবং আইনজীবী আশিস গয়াল এক খোলা চিঠিতে জানিয়েছেন, এই ধরনের অভিযোগের তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মেনে অভ্যন্তরীণ কমিটি গড়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তা না করে বিশেষ বেঞ্চ গড়া হয়েছে। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি অভিযোগকারিণীর বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল ও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা তাঁর চরিত্র হনন করেছেন। অভিযোগকারিণীকে বক্তব্য শোনার জন্য তাঁকে নোটিস পর্যন্ত পাঠানো হয়নি।
গৌরব ভাটিয়া ও আশিস গয়ালের বক্তব্য, ‘‘বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান মানানকুমার মিশ্র এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু আমরা তাঁর এই মতকে সমর্থন করি না। এই অবস্থান সংবিধানসম্মত নয়।’’
প্রায় একই অবস্থান নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট অ্যাডভোকেটস অন রেকর্ড অ্যাসোসিয়েশন। আবার সুপ্রিম কোর্ট এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন প্রধান বিচারপতির পাশে দাঁড়িয়েছে। তাঁকে সমর্থন করেছে অসমের রাজনৈতিক সংগঠন আসু-ও।
এ বিষয়ে শিশু সুরক্ষা অধিকার কর্মী ও আইনজীবী উৎসব বাইন্স দাবি করেন, প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্যই ষড়যন্ত্র হয়েছে। এই মামলা লড়ার জন্য এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁকে ১ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন বাইন্স।
সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা এক আর্জিতে বাইন্স জানান, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এই ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগের তদন্তের জন্য বিচারবিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন। সত্য প্রকাশ করেছেন বলে তাঁর প্রাণসংশয় হতে পারে বলেও দাবি বাইন্সের।