এবার ফেনীর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের শ্লীলতাহানি থেকে শুরু করে অগ্নি–সন্ত্রাস চালানো পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেমের কী ভূমিকা ছিল, তা জানতে তদন্ত দল গত বুধবার সোনাগাজী থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীতে পিবিআই সদর দপ্তরে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে জেরা করা হয়েছে। জেরার সময় ওসি বিমর্ষ ছিলেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
নুসরাত জাহানের আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিডিওতে ধারণ এবং তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৫ এপ্রিল মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সায়েদুল হক। মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। পিবিআইয়ের তদন্ত দল বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
পিবিআই সূত্র জানায়, গতকাল আট সদস্যের তদন্ত দলের নেতৃত্ব দেন পিবিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ পরিদর্শক আনসারুজ্জামান, এসআই মনির হোসেনসহ আরও সাতজন। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তাঁরা সোনাগাজী থানা ভবনে ছিলেন। ২৭ মার্চের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ তাঁরা দেখেছেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তাঁরা।
পিবিআইয়ের একটি সূত্র জানায়, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিডিওতে গত ২৭ মার্চ ধারণ করেছিলেন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। সেদিন নুসরাতকে নেকাব খুলতে বাধ্য করা এবং কিছু আপত্তিকর প্রশ্ন করেছিলেন ওসি। এ সম্পর্কে ওসিকে মঙ্গলবার জেরা করে পিবিআইয়ের তদন্ত দল। কিন্তু ওসি ফেসবুকে ওই ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে ভিডিওতে নুসরাতের সঙ্গে পুরুষ কণ্ঠ যে তাঁর, তা তিনি অস্বীকার করেননি।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কক্ষে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা। এরপর নুসরাতের মা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই দিন ওসি অতি উৎসাহী হয়ে নুসরাতকে থানা ভবনে ডেকে নিয়ে তাঁর বক্তব্য মুঠোফোনে রেকর্ড করেন, যা ৮ এপ্রিল কিছু টিভি চ্যানেলে প্রচার হয়। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পিবিআইয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, মঙ্গলবার পিবিআইয়ের সদর দপ্তরে ওসি মোয়াজ্জেমকে নুসরাতের ভিডিও নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। তাঁকে তখন বিমর্ষ দেখা গেছে।