র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘জঙ্গি আস্তানায় কয়জন নিহত হয়েছে এই মুহূর্তে তা বলতে পারছি না। বাড়িটি লণ্ডভণ্ড অবস্থায় আছে। এখনও পুরো বাড়ি পরিষ্কার করা হয়নি। বাড়িটি পরিষ্কার করতে সময় লাগবে। এরপর নির্দিষ্ট করে নিহতের সংখ্যা বলা যাবে। তবে ঘরের মধ্যে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তিনটি পা দেখা গেছে। ধারণা করছি সেখানে অন্তত দু’জন নিহত হয়েছে।’
র্যাবের মহাপরিচালক সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে বসিলার মেট্রো হাউজিংয়ে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
র্যাব ডিজি বলেন, ‘আমাদের সদস্যরা কেয়ারটেকারকে বাড়ি থেকে বের করে এনে কথা বলেন। তখন আমাদের সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। আমরাও পাল্টা গুলি চালাই। র্যাব প্রায় ১৫০ রাউন্ড গুলি করেছে। তারাও গুলি করেছে। তারা কিছু ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) নিক্ষেপ করেছে আমাদের দিকে। শেষের দিকে তারা বাড়িটি উড়িয়ে দিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘রাতে আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছি। হলি আর্টিজানের পর থেকেই আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছি। প্রতি সপ্তাহেই আমরা জঙ্গি গ্রেফতার করছি। আমরা যত কাজই করি না কেন জঙ্গিদের থেকে দৃষ্টি ফেরাইনি। একদিন আগেও বরিশাল থেকে জঙ্গি গ্রেফতার করেছি।’
বাড়িতে অবস্থান নেওয়া জঙ্গিরা কোন সংগঠনের ছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এটা প্রাথমিক অবস্থায় আছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
অভিযান শেষ হতে কত সময় লাগবে-এ বিষয়ে ডিজি বলেন, ‘অভিযান পুরোপুরি শেষ হয়নি। এখন আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সুইপ করছে। এরপর ডগ স্কোয়াড সুইপ করবে। তারপর অভিযান শেষ হবে।’
এত বিস্ফোরক কীভাবে নিয়ে আসা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা ধরতে পারলে এ পর্যন্ত আমাদের আসতে হতো না। আমরা আগেই তাদের ধরে ফেলতাম। আমাদের যথেষ্ট চেষ্টা রয়েছে, যাতে কেউ বিস্ফোরক সংগ্রহ, মজুত বা এগুলো ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ নিতে না পারে। এসব বিষয়ে আমরা নজরদারি করি। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা এ ধরনের অনেক ঘটনা থামিয়ে দিয়েছি। সেগুলো আপনারা জানেন না।’
প্রসঙ্গত, জঙ্গিদের অবস্থানের খবর পাওয়ার পর রবিবার রাত ৩টার দিকে মেট্রো হাউজিংয়ে ওই টিনশেড বাসাটি ঘিরে ফেলেন র্যাব-২ এর সদস্যরা। অভিযান শুরুর পরপরই ওই বাসার ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এবং র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। পরে র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। সকাল ৯টার পর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে সঙ্গে নিয়ে র্যাবের স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা ওই বাড়িতে ঢোকে। ওই সময়ও সেখান থেকে কয়েক দফা গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এরপর বেলা ১১টার বাঁশ ও টিন দিয়ে তৈরি বাড়িটিতে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফারায় সার্ভিসের ইউনিট কাজ করছে।