অভিনেত্রী ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলাটি রমনা থানার পুলিশকে তদন্ত করে আগামী ১৬ জুন (রোববার) প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের আদালত এ নির্দেশ দেন।
এর আগে এ সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন স্টুডেন্ট জার্নাল বিডির (অনলাইন পত্রিকা) সম্পাদক মিঞা মো. নুজহাতুল হাসান। সে সময় আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেবেন বলে মৌখিকভাবে জানানো হয়।
বাদী তার জবানবন্দিতে বলেন, গত ২৪ এপ্রিল বিকেল সাড়ে চারটার সময় জাতীয় প্রেসক্লাবে অবস্থিত জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনের ই-কমার্সভিত্তিক পর্যটন বিষয়ক সাইট ‘বিন্দু ৩৬৫’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাদীসহ বিভিন্ন মিডিয়াকর্মী, সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেলিব্রেটির উপস্থিতিতে ওই সময়ে বিবাদী শমী কায়সার দু’টি স্মার্টফোন খোয়া যাওয়ার অভিযোগ এনে সাংবাদিককদের ‘চোর’ বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাদের আটক করে রেখে দেহ তল্লাশি করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। যা বিভিন্ন মিডিয়ার ক্যামেরায় ধারণকৃত হয় এবং সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এটি সাংবাদিকদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। জাতীর কাছে সাংবাদিকদের কটাক্ষ করা হয়েছে।
বাদী আরো উল্লেখ করেন, ঘটনার পর গত ২৭ এপ্রিল ওই বিষয় নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও মামলা না নেওয়ায় আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
গত ২৪ এপ্রিল প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে প্রায় অর্ধশত ফটো ও ভিডিও ক্যামেরা এবং শতাধিক মানুষের সামনে চুরি হয় শমী কায়সারের দু’টি স্মার্টফোন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষ করে কেক কাটার সময়ই হঠাৎ করে তিনি জানান, তার স্মার্টফোন দু’টি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ফোন দু’টিতে কল দিয়ে তখনও সচল পাচ্ছিলেন তিনি।
শমী কায়সারের এমন মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই মিলনায়তনের মূল প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে শমীর নিরাপত্তাকর্মী সবার দেহ তল্লাশি করতে চাইলে তাতে সম্মতি জানান উপস্থিত সংবাদকর্মীরা। তখন কেউ কেউ তল্লাশিসাপেক্ষে বের হতে চাইলে সেই নিরাপত্তাকর্মী সাংবাদিকদের ‘চোর’ বলে ওঠেন। এতে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে আসা সাংবাদিকরা। এসময় অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হয় সাংবাদিকদের।
পরে সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে কেক নিয়ে আসা লাইটিংয়ের এক কর্মী স্মার্টফোন দু’টি নিয়ে গেছেন।
এরপর সাংবাদিকদের প্রতি ‘দুঃখ প্রকাশ’ করেন শমী কায়সার। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়েছে, যা অনিচ্ছাকৃত। আসলে মুঠোফোন আমাদের সবার জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে সেখানে।
এই পরিস্থিতিতে প্রধান অতিথি আসার আগেই অনুষ্ঠান সমাপ্ত করে ফেলেন আয়োজকেরা।
এদিকে ফোন চুরি এবং এজন্য সাংবাদিকদের সন্দেহ করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনুষ্ঠানে পেশাগত দায়িত্ব পালনে আসা সাংবাদিকেরা। একইসঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় ক্ষোভও প্রকাশ করেন তারা।