ঢাকা শহরে রাস্তার পাশের ভবনগুলোর গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান বা অন্য কিছু থাকলে তা অপসারণ করতে ভবন মালিকদের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পার্কিংয়ের জায়গায় নকশা বহির্ভূতভাবে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকান একমাসের মধ্যে না সরালে পরবর্তী ছয়মাসের মধ্যে তা অপসারণ করতে রাজউককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর বুধবার (৩ জুলাই) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে করা রিট আবেদনে জারি করা রুলের ওপর এ রায় দেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাজউকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন ও মো. শাহজাহান।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, রাজউক ভবন নির্মাণের সময় কার পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করে লে আউট প্ল্যান পাস করে। আইন অনুযায়ী উক্ত প্ল্যান বহির্ভূত যে কোনো ভবন নির্মাণ বা ব্যবহার অবৈধ এবং রাস্তার পাশের ভবনের কার পার্কিংয়ের জায়গায় দোকান পরিচালনার কারণে রাস্তায় ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম সৃষ্টি করে চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
আদালত এ বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। সেগুলো হলো- রাস্তার পাশে স্থাপিত ভবনের কার পার্কিং এলাকায় অনুমোদনহীন নির্মিত স্থাপনা অপসারণের জন্য ৩০ দিনের মধ্যে রাজউক বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে পাবলিক নোটিশ জারি করবেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার অথরাইজড অফিসার মাইকিং করে নোটিশের বিষয়ে সবাইকে অবহিত করবেন। ভবন মালিকরা নিজ উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ না করলে পরবর্তী ছয়মাসের মধ্যে তা অপসারণ করতে রাজউককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই অপসারণের খরচ ভবন মালিকের কাছ থেকে আদায় করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের যেসব জায়গায় কার পার্কিংয়ের জন্য সিটি করপোরেশন অনুমোদন দেয়নি সেসব স্থান থেকে গাড়ি পার্কিং বন্ধ করে আইনগত পদক্ষেপ নিতে সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে প্রতি তিনমাস পরপর অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট অনুমোদনহীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। রিটের বিবাদীরা হলেন, পূর্ত সচিব, ঢাকার দুই মেয়র, রাজউক চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার। এ রুলের পর নির্দেশনা অনুযায়ী এ রকম কয়েকশ ভবনের তালিকা আদালতে দাখিল করেছিলো রাজউক।