সারাদেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার গুণগত মানের দিকে সোচ্চার হতে নির্দেশনার পাশাপাশি চিকিৎসায় অহবেলা বা অন্য যে কোনো কারণে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল ভাংচুর বা এ ধরণের কোন কার্যকলাপ না করার জন্য এবং আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
রাজধানীর মহাখালীর বেসরকারি হসপিটাল ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুরের মামলায় মানবাধিকারকর্মী আনোয়ারা তাসলিমার জামিন শুনানিতে আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন।
এর আগে, রোগী মারা যাওয়ার পর ভাংচুর এবং বিশৃংখলা তৈরির অভিযোগে মানবাধিকারকর্মী আনোয়ারা তাসলিমাকে কেন এজাহারভুক্ত করা হয়েছে তা লিখিত ব্যাখ্যা দিতে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (প্রাক্তন আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতাল) এমডিকে গত ২ জুলাই তলব করেন হাইকোর্ট। আজ তলবে আদালতে হাজির হন তিনি।
এদিন স্বশরীরে হাজির হয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার পর হাইকোর্ট হাসপাতালটির এমডিকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। পাশাপাশি মানবাধিকারকর্মী আনোয়ারা তাসলিমার ৩ সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে হাইকোর্টের জামিন শেষ হবার পর আসামীকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে রোগীর স্বজনদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোনসুরুল হক চৌধুরী এবং অ্যাডভোকেট তানজিম আল ইসলাম ও রাশেদুল হক।
পরে আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার গুণগত মান নিশ্চিতের পাশাপাশি চিকিৎসায় অহবেলা বা অন্য যে কোনো কারণে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল ভাংচুর বা এ ধরণের কোন কার্যকলাপ না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইউনিভার্সেল হাসপাতালে শহীদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। গত ১৪ মে কিডনির সমস্যা নিয়ে তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
মৃত শহীদুলের স্বজনদের অভিযোগ, এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর অবস্থা তাদের জানায়নি। তবে গত ২১ জুন সন্ধ্যায় শহীদুলের স্বজনরা হাসপাতালের কর্মকর্তাদের কাছে রোগীর অবস্থা জানতে চাইলে তিনি মারা যাওয়ার বিষয়টি স্বজনদের নিশ্চিত করা হয়। পরে রোগীর স্ব জন এবং বহিরাগতরা মেডিকেলে ভাংচুর চালালে
পরে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মৃতের স্বজন এবং বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওই মামলায় মৃতের স্বজনসহ মানবাধিকারকর্মী আনোয়ারা তাসলিমার আগাম জামিনের আবেদন করলে শুনানি নিয়ে গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) হাসপাতালটির এমডিকে তলব করেন হাইকোর্ট।