অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ:
আলোচনায় এবার দণ্ডবিধির ১৭ অধ্যায়। এখানে সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনাগুলো আছে। এর বিস্তৃতি ৩৭৮ থেকে ৪৬২খ পর্যন্ত। এর আগের অংশে যেমনটি দেখেছেন যে, ১৬ অধ্যায়ে ‘দেহ ও জীবন সংক্রান্ত অপরাধসমূহ প্রসঙ্গে’ শিরোনামের পরে বেশ কিছু উপশিরোনামে বিভিন্ন টপিক আলোচিত হয়েছে; এবারও তেমনিভাবে ‘সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধসমূহ প্রসঙ্গে’ মূল শিরোনামের অধীনেও অনেকগুলো উপশিরোনামে অনেকগুলো টপিক আলোচনা রয়েছে শুধু ১৭ তম অধ্যায়েই। এই ১৭ তম অধ্যায়ের বিস্তৃতিই ৩৭৮-৪৬২খ পর্যন্ত।
সমাজে বেশিরভাগ অপরাধই ঘটে মানুষের সম্পত্তি নিয়ে। সম্পত্তিকে কেন্দ্র করেই আবার দেহ ও জীবন সংক্রান্ত অপরাধও ঘটে থাকে প্রধানত। সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধের প্রায় সমস্ত বৈচিত্র উল্লিখিত অধ্যায়টিতে বিধৃত আছে। এই অংশে যতো ডিটেইলে সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে আলোচনা আছে সেটি মাঝে মাঝে বিস্ময়কর ঠেকে আমার কাছে যে, সেই প্রায় ১৫০ বছর আগে কীভাবে আইন প্রণেতারা এতো ডিটেইলে এটি প্রণয়ন করলেন? তখনো কী এতো এতো অপরাধ সমাজে বিদ্যমান ছিলো? কিংবা আইনপ্রণেতারা কীভাবে এতো দুরদৃষ্টি নিয়ে আইনটি প্রণয়ন করেছিলেন? যাইহোক, এর পরিচয়পর্বে আমরা ঢুকি।
প্রথমেই ১৭ অধ্যায়ের থাকা টপিকগুলো একে একে দেখি। একটা কথা বলে দেওয়া ভালো যে, এর শুরুর অংশে ৩৭৮-৪০২ পর্যন্ত খুব ভালোভাবে পড়তে হবে; বস্তুত এর প্রায় সবই মনে রাখা বাঞ্ছনীয়। ১৮৬০ সালে যখন আইনটি প্রণীত হয়েছিলো তখন সম্পত্তি সংক্রান্ত নিচের প্রথম ১০টি অপরাধকে সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে ৪৬২ক-৪৬২খ ধারায় ব্যাংকিং প্রসঙ্গের অংশটি যুক্ত হয়েছে বর্তমানে সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা মূলত ১১ টি। এটি ১৭ অধ্যায়ে। সে যাই হোক নিচের ওভারভিউটি দেখুন ১৭ তম অধ্যায় নিয়ে। প্রধান টপিকগুলো সম্পর্কে আগে ধারণা রাখুন।
১. চুরি সম্পর্কিত [৩৭৮-৩৮২]
২. বলপ্রয়োগে সম্পত্তি আদায় সম্পর্কে [৩৮৩-৩৮৯]
৩. দস্যুতা ও ডাকাতি প্রসঙ্গে [৩৯০-৪০২]
৪. অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎ প্রসঙ্গে [৪০৩-৪০৪]
৫. অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ প্রসঙ্গে [৪০৫-৪০৯]
৬. চোরাই সম্পত্তি গ্রহণ প্রসঙ্গে [৪১০-৪১৪]
৭. প্রতারণা সম্পর্কিত [৪১৫-৪২০]
৮. প্রতারণামূলক দলিলসমূহ ও সম্পত্তি বেদখল প্রসঙ্গে [৪২১-৪২৪]
৯. ক্ষতিসাধন প্রসঙ্গে [৪২৫-৪৪০]
১০. অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ প্রসঙ্গে [৪৪১-৪৬২]
১১. ব্যাংকিং কোম্পানির ক্ষতিসাধন প্রসঙ্গে [৪৬২ক-৪৬২খ]
উপরের বর্ণনার পরেও এটিকে চার্ট আকারে দিয়ে রাখলাম নিচে।
কোন কোন বিষয়বস্তু এখান থেকে অতি গুরুত্বের সাথে পড়তে হবে, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। এই ১১ টি উপশিরোনামেই এই অধ্যায়ের আলোচনায় সম্পত্তি সংক্রান্ত ফৌজদারি অপরাধের সংজ্ঞা, সেগুলোর শাস্তি, ব্যতিক্রম ইত্যাদি আলোচনা আছে। আবারো স্মরণ করিয়ে দিই যে, ফৌজদারি অপরাধগুলো প্রধানত ও বেশিরভাগ সংঘটিত হয় মানুষের দেহ ও মানুষের সম্পত্তিকে ঘিরে। ফলে দণ্ডবিধির ১৬ অধ্যায়টি গুরুত্বপূর্ণ যেমন, এই ১৭ অধ্যায়টিও অত্যন্ত জরুরি।
গুরুত্বপূর্ণ ধারা ও পড়ার নির্দেশনা
১. প্রথমেই আছে ‘চুরি সম্পর্কে’। ৩৭৮ থেকে ৩৮২। অল্প কয়েকটি ধারা, কিন্তু সবই ঠোটস্থ রাখতে হবে। সহজ আছে কিন্তু। ৩৭৮ এ চুরির সংজ্ঞার ৫টি উপাদান মনে রাখলেই চুরির সংজ্ঞা মুখস্থ হয়ে যাবে। এর ব্যাখ্যা এবং উদাহরণগুলো বারবার করে পড়তে হবে। উদাহরণগুলো থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা খুব বেশি। ৩৭৮ ধারায় সংজ্ঞাটি উল্লেখ করেই পরবর্তী ৪টি ধারায় ধারাবাহিকভাবে ৪ ধরনের শাস্তির কথা বলা আছে। অপরাধের মাত্রাগত তারতম্যের ভিত্তিতে শাস্তিগুলো ভিন্ন ভিন্ন। কোন কোন পরিস্থিতিতে শাস্তি কী সেটির টপিকসমেত মনে রাখলেই চলে। আমার লেখা মূল ‘চিরুনি অভিযান’ বইয়ে একটি ক্লু দিয়েছিলাম। ৩, ৭, ৭ এবং ১০ বছরের শাস্তি যথাক্রমে সাধারণ চুরি, বাসগৃহে চুরি, চাকর কর্তৃক চুরি এবং চুরির উদ্দেশ্যে আঘাত বা আটকানোর প্রস্তুতি নিলে – এই ৪টি ভিন্ন পরিস্থিতির চুরির শাস্তি। সহজ। সাঁইত্রিশ হাজার সাতশত দশ – এভাবে মনে রাখুন।
চুরি সংক্রান্ত ধারাগুলো আরো পোক্ত করে পড়ে রাখতে বলবো এজন্য যে, সম্পত্তি সংক্রান্ত অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রেও এর মূল কাঠামোর একটি সাধারণ মিল বারেবারেই খুঁজে পাবেন। চুরির ক্ষেত্রে দেখুন যে, যখন সহজে চুরি করা যায় এমন কোনো স্থান থেকে চুরি হয় তখন সেখানে শাস্তি কম। কিন্তু কোনো কঠিন বা রক্ষিত কোনো স্থান থেকে যখন চুরি হয় তখন তার শাস্তি বেশি। আবার বিশ্বস্ত লোক, যেমন আপনার বাড়ির গৃহভৃত্য বা গৃহপরিচারিকা কর্তৃক চুরি হলে তার শাস্তিও বেশি। কেননা, তাকে আপনি বিশ্বস্ত লোক হিসেবে গণ্য করেন এবং তিনি আপনার বাড়ির প্রায় সমস্ত তথ্যই সাধারণত জেনে থাকেন। সুতরাং, বিশ্বস্ততা ভঙ্গ করে কেউ যখন চুরি করবে তখন অবশ্যম্ভাবীভাবে সেই চুরির সাজা বেশি হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
তার মানে, চুরির এই শাস্তিগুলোর প্যাটার্ন ভালো করে বুঝলে ইনফ্যাক্ট সম্পত্তি সংক্রান্ত ফৌজদারি অপরাধ সম্পর্কে বা দণ্ডবিধির দার্শনিক ভিত্তিও আপনার উপলব্ধিতে চলে আসবে। চুরিকে চুরি করুন ভালোভাবে!! 🙂
২. এরপরে ৩৮৩ থেকে ৩৮৯ পর্যন্ত ‘বলপ্রয়োগে সম্পত্তি আদায় প্রসঙ্গে’। যথারীতি এর প্রথম ধারাটি অর্থাৎ ৩৮৩ ধারাটি এই অপরাধের সংজ্ঞা বিধৃত করেছে উদাহরণসমেত। আর তার ঠিক পরের ধারাটিতেই চুরির অংশের মতোই এর সাধারণ শাস্তির কথা বলা আছে। এবং সাধারণ চুরির শাস্তির সমানই এর শাস্তি, অর্থাৎ ৩ বছর। মনে রাখাটিকে এভাবে সহজ করে ফেলা যায়। অর্থাৎ ৩৮৩ তে সংজ্ঞা এবং ৩৮৪ তে সাধারণভাবে বলপূর্বক সম্পত্তি আদায়ের শাস্তি। তবে এর পরের কয়েকটি ধারায় মনোযোগী পাঠকদের চোখে সামান্য গণ্ডগোল ধরা দেবে। মানে, পরের ধারাগুলোতে অপরাধের তারতম্যের কারণে শাস্তির ভিন্নতার মধ্যে একধরনের অসঙ্গতি আছে। ৩৮৫, ৩৮৬ এবং ৩৮৭ এর ভেতরে এই অসঙ্গতি চোখে পড়বে। আইনে মাঝে মাঝে এসব অসঙ্গতিতে মাইন্ড করবেন না! 🙂 মূলত, ৩৮৩-৩৮৬ ধারা কয়েকটি ভালোভাবে মনে রাখবেন। এই শাস্তিগুলোকেও চুরির শাস্তির মতো করে নিজের মতো সাজিয়ে নিতে পারেন।
৩. এরপরে ৩৯০ থেকে ৪০২ পর্যন্ত ‘দস্যুতা ও ডাকাতি প্রসঙ্গে’ আলোচনা। ৩৯০ ধারায় দস্যুতা এবং ৩৯১ ধারায় ডাকাতি, এভাবে পরপর দুইটি সংজ্ঞায় দুইটি অপরাধের সংজ্ঞা দেওয়া আছে। মজার ব্যাপার হলো – দস্যুতা মূলত আগের দুইটি টপিকের অপরাধ দুইটির [চুরি ও বলপূর্বক সম্পত্তি আদায়] মাত্রাগত তারতম্যকে নির্দেশ করে। আর দস্যুতায় যখন ৫ বা ততোধিক সদস্য থাকে তখনই তা ডাকাতির সংজ্ঞার ভেতরে পড়ে যাবে। অর্থাৎ দস্যুতা ও ডাকাতি কোনো মৌলিক অপরাধ নয়। এই দুইটিতে অবশ্যই চুরি অথবা বলপূর্বক সম্পত্তি আদায়ের অপরাধ ঘটতে হবে। উক্ত সংজ্ঞা সংক্রান্ত দুইটি ধারার পরপরই ৩৯২ থেকে দস্যুতার সাজা এবং ৩৯৫ থেকে ৪০২ পর্যন্ত ডাকাতির সাজা বর্ণিত আছে। মাঝখানে ৩৯৪ক ধারাটি হঠাৎ করে লটারি অফিস পরিচালনা বিষয়ক অপরাধ সংক্রান্ত। বিশেষত ৩৯৬ ধারাটিসহ ডাকাতির সাজা সংক্রান্ত প্রতিটি ধারাই জরুরি। মনে রাখতে হবে।
উপরে বর্ণিত ৩টি উপশিরোনামে ৪টি অপরাধের অংশ থেকেই বেশি প্রশ্ন আসে। সুতরাং উপরোক্ত অংশগুলো ভালো করে পড়ার কোনো বিকল্প নেই। এটারও সাধারণ একটি চার্ট থাকলো নিচে। চার্টটির ৩৯৬ ধারা পর্যন্ত সবগুলোই গুরুত্ব দিয়ে পড়ে পরেরগুলো স্কিপ করতে পারেন।
৪. এরপরে সম্পত্তি আত্মসাৎ প্রসঙ্গে আলোচনা আছে। সম্পত্তি আত্মসাৎ করা যায় দুইভাবে। একটা অপরাধমূলক সম্পত্তি আত্মসাৎকরণ প্রসঙ্গে বা Of Criminal Misappropriation of Property [৪০৩ ও ৪০৪ ধারা] এবং অন্যটা অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ প্রসঙ্গে বা Of Criminal Breach of Trust [৪০৫ থেকে ৪০৯ ধারা]। এই দুইটি বিষয় আলাদা উপশিরোনামে বিভক্ত আছে।
ক. অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎকরণ
খ. অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে সম্পত্তি আত্মসাৎকরণ
৪০৩ ও ৪০৪ – পরপর দুইটি ধারার প্রথমটিতে সংজ্ঞা ও বেসিক শাস্তি উভয়ই এবং পরেরটিতে আরেকটি বিশেষ পরিস্থিতিতে অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎ করা হলে কী শাস্তি তা বলা আছে। ৪০৩ ধারায় অনেকগুলো উদাহরণও দেওয়া আছে বোঝার সুবিধার্থে। সেগুলো দেখবেন মনোযোগ দিয়ে। আর এর পরেই আছে ৪০৫ এ অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের সংজ্ঞা। সংজ্ঞা সংক্রান্ত এই ধারাটিও অনেক উদাহরণসমৃদ্ধ। ৪০৬, ৪০৭, ৪০৮ এবং ৪০৯ এ ৪টি ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে উক্ত অপরাধের শাস্তির তারতম্যগুলো খেয়াল করলে দেখবেন যে, চুরির ধারাগুলোতে যেই ধারাবাহিকতা ও বিষয়বস্তু ছিলো হুবহু সেভাবেই এর শাস্তিগুলো বলা আছে। অর্থাৎ ৩, ৭, ৭ এবং ১০ বছরের শাস্তি যথাক্রমে। মনে রাখা কঠিন নয় মোটেও! আবারো সাঁইত্রিশ হাজার সাতশত দশ! নিচের চার্টটি দেখুন।
৫. এরপরে ‘চোরাই সম্পত্তি গ্রহণ প্রসঙ্গে’ যার বিস্তৃতি ৪১০ থেকে ৪১৪। মাত্র কয়েকটি ধারা এবার। এর আগে কয়টি অপরাধের কথা পড়ে আসলেন উপরে? মোট ৬টি। যথাক্রমে চুরি, বলপূর্বক সম্পত্তি আদায়, দস্যুতা, ডাকাতি, অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎ এবং অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ। এই প্রতিটি অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধটি সংঘটনের মধ্য দিয়ে যে সম্পত্তি গ্রহণ বা লব্ধ হয়েছে উক্ত অপরাধীদের কর্তৃক, সেগুলোই ‘চোরাই সম্পত্তি’। ডাকাতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করা ব্যতীত বাকী ৫টি অপরাধের উল্লেখ করে ৪১০ ধারায় এর সংজ্ঞা দেওয়া আছে, অন্যদিকে ডাকাতির মাধ্যমে লব্ধ চোরাই সম্পত্তি প্রসঙ্গে ৪১২ ধারায় বলা আছে। মাঝখানে ৪১১ ধারাটিতে চোরাই সম্পত্তি গ্রহণের সাধারণ শাস্তি বর্ণিত আছে। ৪১৩ এবং ৪১৪ ধারাটিও শাস্তি সম্পর্কিত। দেখবেন। চোরাই সম্পত্তির সংজ্ঞা উপলব্ধির ক্ষেত্রে নিচের ছকটি পরীক্ষার জন্য কতটি গুরুত্বপূর্ণ তা জানিনা, কিন্তু দেখে রাখেন।
৬. এরপরে বিখ্যাত ৪২০! মানে চিটিং বা প্রতারণা সম্পর্কিত। এর বিস্তৃতি ৪১৫ থেকে ৪২০ ধারা পর্যন্ত। আবারো অল্প কয়েকটি ধারাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অপরাধের সংজ্ঞা ও শাস্তি। প্রতারণা সংক্রান্ত সংজ্ঞার ধারা দুইটি। ৪১৫ ও ৪১৬। আর অবশিষ্ট ৪টি ধারায় ৪ রকমের শাস্তির কথা বলা আছে। সেটাও সিরিয়াল করে মনে রাখা সহজ। ১, ৩, ৩ এবং ৭। ভুলে যাবার সুযোগ নাই, ভুললেও মাফ নাই! 🙂
৭. ৪২১ থেকে ৪২৪ পর্যন্ত ‘প্রতারণামূলক দলিলসমূহ ও সম্পত্তি বেদখল প্রসঙ্গে’ অংশটুকু বাদ দিতে পারেন। আর তার পরে ৪২৫ থেকে ৪৪০ ধারা পর্যন্ত ‘ক্ষতি প্রসঙ্গে’। অনেকগুলো ধারা হলেও জাস্ট ৪২৫, ৪২৬ এবং ৪২৭ এই তিনটি ধারা পড়লেই চলবে।
৮. অনেক তো হলো। অনেকগুলো টপিক। তবুও আরেকটু এগোতে হবে আমাদেরকে। ‘অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ’ উপশিরোনামে ৪৪১ থেকে ৪৬২ পর্যন্ত বিষয়বস্তু বিধৃত আছে। অনেকগুলো ধারা আছে। এর ভেতরে রংবেরংয়ের নানা সংজ্ঞা ৪৪১-৪৪৬ পর্যন্ত ধারাগুলোতে আছে। আর প্রধান যে শাস্তির ধারাগুলো মনে রাখা দরকার সেগুলো হলো – ৪৪৭, ৪৪৮ এবং ৪৫৩ ধারা তিনটি। বাকীগুলো পড়ে রাখতে পারেন। কিন্তু আমার বিবেচনায় অবশিষ্ট ধারাগুলো এক্কেবারে না দেখলেও চলবে। মাথায় বেশি গ্যাঞ্জাম লেগে গেলে কিছু বিষয় জাস্ট মুখস্থ রাখবেন। বোঝাবুঝির প্যারা নিতে যাবেননা অন্তত এই টপিকটির ক্ষেত্রে।
৪৬২ক ও ৪৬২খ তে যে ২ বছর করে সাজার কথা বলা আছে সেটা মনে রাখতে কি খুব কষ্ট হবে? মূল ধারা দুইটি দেখে নেবেন।
সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধসমূহের এই বিশাল বহর দেখে দুশ্চিন্তা করবেন না। কেননা, অনেকগুলো টপিক হলেও এর অনেক ধরনের রিদমিক ব্যাপার আছে যা কিনা আপনার পড়াকে খুব সহজ করে দিয়েছে।
দেহ ও জীবন সংক্রান্ত অপরাধসমূহ এর টপিকগুলো সাধারণভাবে শিক্ষার্থীরা কম মনোযোগ দিয়ে পড়েন। অনেক সময় সেগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে কঠিন ও ভীতিকর ঠেকে। সেদিক থেকে সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধসমূহ সহজ আছে অনেক বিবেচনায়। এই অংশ থেকে প্রশ্নের সংখ্যাও নেহায়েত কম থাকে না। সুতরাং এই অংশটুকুতে ভালোভাবে মনোযোগ দিলে কয়েকটি নাম্বার নিশ্চিতভাবেই তোলা যাবে বলে মনে করি।
আজ এটুকুই। সকল শিক্ষার্থী-পরীক্ষার্থীর জন্য শুভকামনা আমার পক্ষ থেকে।
লেখক : আইনজীবী ও ‘আইনের ধারাপাত – MCQ মডেল টেস্ট বুক’ এর রচয়িতা এবং ফাউন্ডার – juicylaw.com