রাজধানীর নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে এডিস মশার প্রজনন রোধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। একইসঙ্গে যেসব ভবনে এডিস মশার প্রজনন স্থল বা প্রজনন হতে পারে এমন পরিবেশ পাওয়া যাবে, সেগুলোর মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ সোমবার (২২ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত চিকিৎসাধীন শিশুদের দেখতে গিয়ে এ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত জানান ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন।
তিনি বলেন, ডিএসসিসি দেখেছে, নির্মাণাধীন ভবনে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক এডিস মশার প্রজনন অন্যান্য জায়গার চেয়ে বেশি। বিভিন্ন ভবন মালিকদের আমরা এ বিষয়ে সচেতন হতে বলেছি এবং তাদের সতর্ক থাকতে বলেছি। যেনো তাদের ভবনে এডিস মশা প্রজননের পরিবেশ সৃষ্টি না হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তারা এ বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করছেন না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এসব ভবনে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। আর যেসব ভবনে এডিস মশার প্রজনন স্থল বা লার্ভা পাওয়া যাবে, সেসব ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই আমি ভবন মালিকদের কাছে অনুরোধ করবো, যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য আপনারা যেনো স্ব স্ব ভবন থেকে এমন প্রজনন স্থল ধ্বংস করে দেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এমন মোবাইল কোর্ট চলবে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমাদের পাঁচটি অঞ্চলের পাঁচজন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও অনেক কর্মকর্তার ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আছে। তাদের ইতোমধ্যেই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যতোদিন না ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততোদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা চলবে।
ডেঙ্গু ভাইরাসের মশার প্রজনন স্থল এবং লার্ভা ধ্বংসের জন্য নগরবাসীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, ১৫ দিনে নগরীর ২৫ হাজার বাসা থেকে লার্ভা ধ্বংসের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এর পাশাপাশি নগরবাসীদের আমরা লার্ভা ধ্বংসের প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। যেনো তারা নিজেরাও এই কাজ করতে পারে। চলতি মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে ডেঙ্গুর আসল মৌসুম শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঝুঁকি আছে। আমাদের ৬৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে, ৫৭টি ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, তবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না। তাই আমাদের সবাইকে সচেতন হয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এরপর শিশু হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন চিকিৎসকদের নিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন শিশুদের দেখতে যান সাঈদ খোকন। এসময় শিশুদের অভিভাবকদের কাছে স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তিনি।
এসময় হাসপাতালের রেসিডেনসিয়াল ফিজিশিয়ান ডা. রিজওয়ানুল হাসান বিপুলসহ অন্যান্য চিকিৎসক মেয়রকে পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিফ করেন।