প্রয়োজনে কাশ্মীরে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। কাশ্মীরকে অবিলম্বে স্বাভাবিক করে তোলারও নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
সেইসঙ্গে কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহকে মুক্তির প্রশ্নে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং কাশ্মীর কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। গতকাল সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জম্মু-কাশ্মীর সংক্রান্ত একাধিক মামলার শুনানি হয়।
তার মধ্যে একটি মামলায় অভিযোগ তোলা হয়েছিল, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, হাইকোর্টে মামলা পর্যন্ত করার পরিস্থিতি নেই। সেই মামলাতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রয়োজন হলে আমি নিজে গিয়ে (হাইকোর্টে মামলা করার পরিস্থিতি রয়েছে কিনা) দেখে আসব।’
কাশ্মীর তথা ৩৭০ অনুচ্ছেদ ‘অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু’ বলে মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার নোটিশ পাঠিয়ে জবাব তলবও করেছেন প্রধান বিচারপতি। খবর এনডিটিভির।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে এর শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা গৃহবন্দি। পুরো বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। এমনকি হাইকোর্টে মামলা করার পরিস্থিতি পর্যন্ত নেই।
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর উপত্যকার এমন পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক মামলা হয় সুপ্রিমকোর্টে। জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহর মুক্তির আর্জি জানিয়ে একটি মামলা করেন ডিএমকে নেতা ভাইকো।
অন্য একটি মামলায় দাবি করা হয়, ফারুক আবদুল্লাহকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে হাজির করাতে হবে। আবার মোবাইল-ইন্টারনেট ও উপত্যকার সাধারণ মানুষের ওপর নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা হয়েছে।
সোমবার সেই মামলাগুলোর শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি, বিচারপতি এএস বোবদে এবং এসএ নাজিরের সাংবিধানিক বেঞ্চে। তার মধ্যে একটি মামলায় বর্ষীয়ান আইনজীবী হাফেজা আহমদী বলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি এমনই যে সেখানে হাইকোর্টে মামলা করার মতো পরিস্থিতিও নেই।
তাই সেখানকার শিশুদের ঘরবন্দি রাখার অভিযোগ তুলে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাইকোর্টে না গিয়ে সরাসরি সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। এরপরই প্রধান বিচারপতি বলেন, দরকার হলে তিনি নিজে কাশ্মীরে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আসবেন।
অর্থাৎ হাইকোর্টে মামলা করার পরিস্থিতি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবেন তিনি। পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি এও বলেন, জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলবেন। তবে অভিযোগ মিথ্যে হলে তার ফল ভোগ করতে হবে- এই ভাষায় আইনজীবী আহমদীকে সাবধান করে দেন প্রধান বিচারপতি।