চেক ডিজঅনার মামলায় খালাস প্রাপ্ত আসামীকে কেন ৫ (পাঁচ) কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারী করেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
চট্টগ্রাম ৫ম যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক, মামলা পরিচালনাকারী এ.পি.পি, চেক ডিজঅনার মামলার বাদী ও তার সহযোগী সংশ্লিষ্ট এস. এ. গ্রুপের ম্যানেজার মোঃ সাইফুদ্দিন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানী করেন অ্যাডভোকেট মুহাম্মাদ আমিরুল হক এবং তাকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট মোঃ সাইফুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত, মাহফুজা বেগম এবং অন্যান্য সহকারী এটর্নি জেনারেলবৃন্দ।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের মেয়াদোত্তীর্ন চেকে ঘষামাজা করে ২০১৬ সালে রুপান্তরিত করে ছুটিতে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তার সিল ব্যবহার করে ডিজঅনার স্লিপ ইস্যু করে চট্টগ্রামের ‘‘সূচনা এন্টার প্রাইজের সত্বাধীকারী ব্যবসায়ী এস এম জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারে মামলা করে এস এ গ্রুপে লবন সরবরাহকারী আব্দুল আলীম। চেক ডিজঅনারের লিগ্যাল নোটিশ প্রদান ও মামলার সমন জারীতে কারসাজি করে আসামী জসিম উদ্দীনকে অন্ধকারে রাখা হয়। পরবর্তীতে কোর্টের ওয়ারেন্ট ইস্যু হলে আসামী এস এম জসিম উদ্দীনকে মানিকগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে সাদা পোষাকের পুলিশ। মামলার বিচারকালে আসামী জসিম উদ্দীনের আবেদনের প্রেক্ষিতে হ্যান্ড রাইটিং এক্সপার্ট ও ইসলামী ব্যাংক, বন্দরটিলা ব্রাঞ্চ এর প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয় চেকটি ছিল ২০১৫ সালের মেয়াদোত্তীর্ন চেক এবং ডিজঅনার স্লিপ ইস্যু করা হয় ছুটিতে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তার সিল ব্যবহার করে। অতপর আসামী এস এম জসিম উদ্দীন আদালতে জাল জালিয়াতি করা চেক ব্যবহার করে মামলা করায় বাদীর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল প্রসিডিং শুরু করার আবেদন করেন। চট্টগ্রাম যুগ্ম মহানগর পঞ্চম দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ জহির উদ্দিন ব্যবসায়ী এস এম জসিম উদ্দীনকে চেক ডিজঅনারের মামলায় খালাস দিলেও মামলার বাদীর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল প্রসিডিং শুরু করার আবেদন খারিজ করেন। মামলার রায়ে ঘষামাজা করে চেকের মেয়াদ বৃদ্ধি ও ছুটিতে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তার সিল ব্যবহার করে ডিজঅনার স্লিপ ইস্যুর বিষয়টি উল্লেখ করেও বিচারক জহির উদ্দীন খালাস প্রাপ্ত আসামী এস এম জসিম উদ্দীনকে ‘‘অভ্যাসগত ভাবে অপরাধের সাথে জড়িত’’ আখ্যা দিয়ে বাদীর বিরুদ্ধে করা তার আবেদন না মঞ্জুর করেন।
পরে খালাসপ্রাপ্ত আসামী এস এম জসিম উদ্দীন উক্ত আদেশে সংক্ষুদ্ধ হয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন মামলা দায়ের করে। রিটে এস এম জসিম উদ্দীন তার সম্পর্কে বিচারক মোঃ জহির উদ্দীনের করা মন্তব্য সম্পর্কিত বিবৃতিটি বেআইনী ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত মর্মে ঘোষণা চান এবং বিবাদীদের নিকট থেকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতি পূরণ দাবী করেন। আদালত রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন।