আসামির কাছ থেকে ইয়াবা জব্দ করে তাদের ছেড়ে ইয়াবার ভাগবাটোয়ারা ও বিক্রির প্রস্তুতির সময় গ্রেফতার পুলিশ সদস্যদের দুইজনের ফের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন- এপিবিএনের কনস্টেবল মো. রনি মোল্ল্যা (২১) ও কনস্টেবল মো. শরিফুল ইসলাম (২৩)।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুইদিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে তুলে ফের পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক পরিদশ চন্দ্র। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহীনুর রহমান এই দু’জনের ফের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওই মামলায় আরও তিন পুলিশ সদস্য রিমান্ডে আছেন। তারা হলেন : গুলশান থানার এএসআই মাসুদ আহমেদ মিয়াজী (৪৪), এপিবিএনের কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল (২৩) ও নায়েক মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৭)।
এই মামলায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর (রোববার) রাতে এপিবিএনের চার পুলিশ কর্মকর্তা এবং গুলশান থানার এক এএসআইকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে উত্তরার এপিবিএন-১ সদর দফতরের ব্যারাক ভবনের চতুর্থ তলার বাথরুমের সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইয়াবার ভাগবাটোয়ারা করছেন। তখনই তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় এপিবিএন। ঊর্ধ্বতনদের অনুমতি নিয়ে একটি ফোর্স যায় সেখানে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন এপিবিএন-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবু জাফর।
অভিযানে বাথরুমের সামনে গিয়ে কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল, কনস্টেবল রনি মোল্ল্যা ও কনস্টেবল শরিফুল ইসলামকে দেখতে পায় তারা। এরপর তাদের নাম-পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হয়। বিস্তারিত পরিচয় নেয়ার পর তল্লাশি চালানো হয় কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডলকে। তার পরিহিত ফুল প্যান্টের ডান পকেট থেকে ১৫৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অভিযান চালানো হয় মণ্ডলের ব্যারাকের রুমে। সেখানে তার কাপড়ের ট্রাঙ্ক থেকে আরও ৩৯৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর শরিফুলের কাছ থেকে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১৫ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়।
এবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় শরীফুলকে। জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে জানায়, সে রনি মোল্ল্যার কাছ থেকে ১৮৫০০ টাকায় ১৫০ পিস ইয়াবা কিনেছে। এরপর গ্রেফতার করা হয় রনিকে।
সর্বশেষ প্রশান্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় গুলশানের গুদারাঘাট চেকপোস্টে একটি মোটরসাইকেল তল্লাশি করে আরোহীর কাছ থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে যোগসাজশ করে তাকে ছেড়ে দিয়ে তার কাছে থাকা ২০০ পিস ইয়াবা গুলশানের এএসআই মাসুদ মিয়াজী তার হেফাজতে রাখে। বাকি ১৫০ পিস নেয় জাহাঙ্গীর আলম।
তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ এর ৩৬ (১) ও ৪১ ধারায় মামলা করা হয়েছে।