প্রশিক্ষণ ছাড়া কোন ভাবেই সফল আইনজীবী হওয়া যায় না উল্লেখ করে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন বলেছেন, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে একজন সফল আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম আদালতে কর্মরত শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সমিতির সভাপতি এ.এস.এম. বদরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে আইনজীবী অডিটরিয়ামে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালা শুভ উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম কামরুন নাহার রুমী, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সম্মানিত সদস্য মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান।
সঞ্চালনায় ছিলেন সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদ ফারুকী, পাঠাগার সম্পাদক ভাস্কর রায় চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক জেবুন নাহার লীনা।
স্বাগত বক্তব্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আইয়ুব খান বলেন, আজকের প্রশিক্ষনার্থী সকল নবীনদেরকে সিনিয়রদের সকল কর্মকান্ড অনুসরন ও অনুকরন করতে হবে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে একজন আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আইনজীবীদের জীবনে কোন হতাশা নাই আছে অবারিত স্বপ্নীল সুন্দর জীবন। এ পেশায় কল্যানমূলক কর্মকান্ড করার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমাদেরকে সেই পথ ধরেই বিচারপ্রার্থী জনগোষ্ঠীর সেবায় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
উদ্বোধনকালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম কামরুন নাহার রুমী বলেন, দেশে বর্তমানে বিচার ব্যবস্থা বিচারক ও আইনজীবীদের ঐকান্তিক প্রচেস্টায় উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির দিকে এগোচ্ছে। নবীনদের পথ চারণায় এর নতুন মাত্রা যোগ হবে। আজকে যারা শিক্ষানবীশ আইনজীবী তারাই একদিন আইনজীবী হিসেবে আইনপেশায় বটবৃক্ষ হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, একটি দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল আইন অঙ্গন। আইনপেশায় আগত নবীনদের প্রথমে খুব কষ্টের সম্মুখীন হতে হবে। সঠিক প্রশিক্ষনের মধ্য দিয়ে নিজেকে যোগ্য আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই অতীতের সকল দু:খ কষ্ট মুছে গিয়ে একটি অনাবিল আনন্দের জীবন পাওয়া যাবে। আমরা আশা করব ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বেঞ্চ এবং বার সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। প্রশিক্ষণ ছাড়া কোন ভাবেই সফল আইনজীবী হওয়া যায় না।
সভাপতির বক্তব্য এ.এস.এম. বদরুল আনোয়ার বলেন, আইনজীবীরা সমাজের সচেতন অংশের প্রতিনিধিত্ব করেন। আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি চট্টগ্রামের প্রতিটা আইনজীবী একজন সচেতন নাগরিক। মানবিক মূল্যবোধ ও মহত্ত্বের দিক থেকেও আমরা শ্রেষ্ঠ। আপনারা আজ যারা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করছেন ভবিষ্যতে আপনারাও বিজ্ঞ আইনজীবী হয়ে এ পেশার মান মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন বলে আমি আশা করি।
কর্মশালায় শিক্ষানবীশদের আইনজীবীদের আচরণ বিধি ও বিচারালয়ে করণীয় বিষয়ে সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, ফৌজদারী কার্যক্রম ও বিচার ব্যবস্থা বিষয়ে সাবেক সভাপতি মো. কফিল উদ্দিন চৌধুরী, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিষয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, দেওয়ানী কার্যক্রম ও বিচার ব্যবস্থা বিষয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জি.পি নাজমুল আহসান খাঁন আলমগীর, অর্থঋণ ও ব্যাংকিং বিষয়ে শামীমা ফেরদৌস মিলি, সাক্ষ্য আইন ও রেজিষ্ট্রেশন বিষয়ে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. খাইরুল আমীন, সাক্ষী ও জেরার কৌশল বিষয়ে সিনিয়র সহকারী জজ বেগম ইশরাত জাহান পুনম, বার ও বেঞ্চের মধ্যে সর্ম্পক বিষয়ে অতিরিক্ত চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহিউদ্দিন মুরাদ শিক্ষানবীশদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
এছাড়া কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ ইছহাক, সহসভাপতি মোহাম্মদ রফিকুল আলম, অর্থ সম্পাদক রফিকুল আলম, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান মুরাদ, নির্বাহী সদস্য যথাক্রমে মো. আলী ইয়াছিন, মো. জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, পাইরিন আকতার, মো. আরিফ উদ্দীন চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন (সম্রাট), মোহাম্মদ আফজাল হোসাইন, মো. শাহেদ উল আলম সাইমন, মো. নাছির উদ্দীন রুবেল, আবদুল জব্বার, মো. রিয়াদ উদ্দীন এবং চট্টগ্রাম আদালতে কর্মরত প্রায় ৬০০জন শিক্ষানবীশ আইনজীবী।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি থেকে শিক্ষানবীশ আইনজীবীগণ শিক্ষা সামগ্রী ও আই.ডি কার্ড গ্রহণ করেন।
রায়হান ওয়াজেদ চৌধুরী/চট্টগ্রাম প্রতিনিধি