যশোরে অ্যাডভোকেট আমির হোসেনের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী সালেহা খাতুনকে (২২) শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। কোতোয়ালি থানায় সোমবার (৪ নভেম্বর) মামলা করেছেন নিহতের বাবা সদর উপজেলার লেবুতলা পূর্বপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম।
মামলায় সদর উপজেলার ডহেরপাড়া গ্রামের মৃত ছাব্বির মুন্সির ছেলে আমির হোসেনকেই শুধু আসামি করা হয়েছে।
শনিবার বিকালে স্বামীর বাড়ি থেকে সালেহা খাতুনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
বাদীর অভিযোগ, গত রমজান মাসের ১১ তারিখে পারিবারিকভাবে অ্যাডভোকেট আমির হোসেনের সঙ্গে সালেহা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়েকে দুই ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণের গহনা (মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা) ও আসামি আমির হোসেনকে আট আনা ওজনের একটি আংটি, বারো আনা ওজনের একটি সোনার চেইন (৭০ হাজার টাকা) দেয়া হয়।
সালেহা তার মাকে জানান, বিয়ের পর আমির হোসেন মেয়েকে বলে- আমি একজন অ্যাডভোকেট। পড়াশুনা করতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আমার অনেক টাকার প্রয়োজন। সংসার করতে হলে তোমার পিতা-মাতার কাছ থেকে যৌতুক বাবদ তিন লাখ টাকা এনে দিতে হবে। তা নাহলে তোমাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে যৌতুক নেব।
আমার মেয়ে সালেহা যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মেয়ে সালেহা খাতুন আসামি আমিরের বসতবাড়ির দোতলায় অবস্থান করছিল। ওই সময় আসামি আমির সেখানে গিয়ে তাৎক্ষণিক পূর্বের দাবিকৃত যৌতুকের টাকা এনে দিতে বলে।
সালেহা অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সালেহাকে কিল, চড়, লাথি, ঘুষি মেয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। আমির একপর্যায়ে সালেহার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। মৃত্যুর ঘটনা আড়াল করতে আমির সালেহার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, আসামি এখনও গ্রেফতার হয়নি। তবে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই আসামিকে গ্রেফতার করা হবে।