বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা ও স্কুলসহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর (পরামর্শক) ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগ করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পারিবারিক, সামাজিক ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন কারণে নৈতিক অবক্ষয়, মাদকাসক্ত ও মানসিক বিকৃতি থেকে রক্ষা করতে এ নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (২৪ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া রিটটি দায়ের করেন।
রিটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব এবং শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদেরকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটের বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট ফরহাদ উদ্দিন ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, আগামী সপ্তাহে রিট আবেদনের ওপর হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগের নিস্ক্রিয়তা বাংলাদেশ সংবিধানের ১৭ (ক ও খ), ১৮ (১ ও ২) ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয়েছে। কেননা, দেশের প্রতিটি নাগরিকের উপযুক্ত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এগুলো নিশ্চিতের বিষয়ে রাষ্ট্র কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কিন্তু ক্রমাগত তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপ্তির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকাসক্তি, যৌন হয়রানি ও আত্মহত্যা চেষ্টা, হত্যাসহ নানারকম নৈতিক অবক্ষয়, বেপরোয়া জীবনযাপন, ব্যক্তিত্বের সংকট, পড়াশোনায় অমনোযোগিতা, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খল জীবনযাপনের ঘটনা ঘটছে। সাম্প্রতিককালে এ বিষয়গুলো আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এসব বিষয় ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে। যার কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি অনিশ্চিত পরিণতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
রিটে আরও বলা হয়, সংবিধানের ১৫(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে একটি পরিকল্পিত অর্থনৈতিক ও কর্মক্ষম জনশক্তি গড়ে তোলা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রত্যেক নাগরিকের সুস্বাস্থ্য ও মানসম্পন্নভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। অথচ সে সুবিধা থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে এবং এর ফলে বিভিন্ন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা বিগত কয়েকবছর ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সমাজে মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর (পরামর্শক) ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগ হওয়া প্রয়োজন।