পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। ঢাকার বায়ুর মান ও জনবল বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বায়ুদূষণ রোধে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ক শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত বায়ু দূষণ রোধে কয়েক দফা নির্দেশনাও দিয়েছেন।
নির্দেশনার মধ্যে অননুমোদিত বা পরিবেশ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া বিভিন্ন ধরনের টায়ার পোড়ানো ও ব্যাটারির রিসাইক্লিং বন্ধ করতে এক মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় প্রবেশকারী ও চলাচলকারী বর্জ্য বহনকারী যান ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বালু সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে দেওয়ার (বস্তায়) ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়। আইন অনুসারে, নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি কালো ধোয়া উৎপাদনকারী যান জব্দ করতে এবং যেগুলোর ইকোনমিক লাইফ শেষ হয়ে গেছে সেগুলোর চলাচল নিষিদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বায়ুদূষণ রোধে তাৎক্ষণিক ১২ দফা নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন দেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এর শুনানি নিয়ে ওই সব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী সাঈদ আহমেদ ও উত্তরের পক্ষে আইনজীবী তৌফিক ইনাম শুনানিতে অংশ নেন।
এর আগে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে গত ২১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
ওইদিন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, রুলে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছেন আদালত।
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ঢাকা শহরের যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার (রাস্তা ও নির্মাণাধীন কাজের জায়গা) কাজ চলছে সেসব এলাকা ঘেরাও করে কাজ করার পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
১৫ দিনের মধ্যে আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ পালন করে এর দুই সপ্তাহের মধ্যে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিপ্তররের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে এবং যেসব এলাকা ধুলাবালিপ্রবণ, যেসব এলাকায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিনে দু’বার পানি ছিটাতে দুই সিটির মেয়র ও নির্বাহীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ আদেশ অনুসারে বিবাদীরা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। পরে এ নিয়ে দুই সিটির নির্বাহীকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।