ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান ও সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকসহ ছয়জনকে গ্রেফতার ও হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাদের জামিন আবেদনের ওপর আংশিক শুনানি শেষে এমন আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামীকাল সোমবার আবেদনের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
জামিন আবেদন করা অন্য চারজন হলেন- কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহ পরাণ তুষার এবং নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন- অ্যাডভোকেট সুমাইয়া জান্নাত, প্রশান্ত কুমার কর্মকার ও তানজিম আল ইসলাম।
পরে অ্যাডভোকেট তানজিম আল ইসলাম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রোববার দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ থেকে জামিন আবেদনের জন্য অনুমতি নিয়ে আগাম জামিন আবেদন করা হয়। এ সময় জামিন শুনানিরও আবেদন জানানো হয়। কিন্তু আদালত আগামীকাল (সোমবার) শুনানির জন্য প্রথমে সময় নির্ধারণ করেন। পরে জামিন আবেদনের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলাম আজ (রোববার) ‘নো অ্যারেস্ট নো হ্যারাস’- এমন আদেশ চাইলে আদালত এ আদেশ দেন। পাশাপাশি আগামীকাল সোমবার আবেদনের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম।
এ মামলার আসামিরা হলেন—মতিউর রহমান, আনিসুল হক, কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মহিতুল আলম পাভেল, শাহপরান তুষার, জসিম উদ্দিন অপু, মোশারফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হায়দার।
একইদিনে (১৬ জানুয়ারি) মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলীম এ ১০ জনকে আসামি করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর বিকালে রেসিডেন্সিয়াল কলেজ ক্যাম্পাসে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয় নাঈমুল আবরার রাহাত। মৃত আবরার রাহাত স্কুল শাখার নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
ঘটনার পরদিন আবরারের বাবা মজিবুর রহমান মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা এবং ৬ নভেম্বর অবহেলাজনিত কারণ উল্লেখ করে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আমিনুল হকের আদালতে আরও একটি মামলা করেন।