পাবনার বিভিন্ন বিলে শীতকালীন অতিথি পাখি শিকার বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।
এ-সংক্রান্ত জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনার পর বিষয়টি আমলে নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিতে বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে এসব অতিথি পাখি রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি এ বিষয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছেন আদালত।
আদালতে বিষয়টি নজরে আনেন লিগ্যাল এইডের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
পরে অ্যাডভোকেট আইনুন্নাহার সিদ্দিকা জানান, শীতের আগমনে পাবনার বিভিন্ন বিলে অতিথি পাখির উপস্থিতি বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে এক ধরনের উৎসুক শিকারি নির্বিচারে হত্যা করছে এসব পাখি।
এছাড়া বিলের পানি কমতে থাকায় পানকৌড়ি ও বেলেহাঁস খাবারের খোঁজে এসব বিলে ভিড় জমায়। মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তের রসনাবিলাসের জন্য পাখি শিকারিরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এসব পাখি রাতের আঁধারে মেরে ফেলছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পাবনার সুজানগরে অবাধে অতিথি পাখি নিধন করা হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারিসহ কিছু সৌখিন শিকারি এই অনৈতিক কাজ করছেন। প্রতিবছর শীতের মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে রাজহাঁস, চখা, পানকৌড়ি, পাতিহাঁস ও কাজলাদিঘিসহ বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি একটু নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটে আসে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গাজনার বিলসহ পদ্মার চরাঞ্চলে। এ বছরও শীতের শুরুতেই এসব পাখি গাজনার বিল ও পদ্মার চরাঞ্চলসহ আশপাশের বিলে আশ্রয় নিয়েছে।
বিলপাড়ের শারীরভিটা গ্রামের বাসিন্দা বাদশা শেখ জানান, মাঝেমধ্যেই শিকারিরা বিলে কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে নির্বিঘ্নে অতিথি পাখি শিকার করছেন। শিকারিরা কখনো দিনে আবার কখনো রাতে পাখি শিকার করে স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি করে থাকেন। সেইসঙ্গে সৌখিন শিকারিরাও মাঝে মধ্যে তাদের বৈধ বন্দুক দিয়ে বিল ও চরাঞ্চল থেকে অতিথি পাখি শিকার করছেন। সৌখিন শিকারিরা অতিথি পাখির পাশাপাশি গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে দেশি পাখিও শিকার করে থাকেন।