ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাদীকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন পঞ্চগড়ের একটি আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান এই দণ্ডাদেশ দেন।
আসামি পলাতক থাকায় তাঁর অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হয়।
বাদী পক্ষে সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মোস্তাফিজুর রহমান মামলাটি পরিচালনা করেন।
মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে—মোশারফ হোসেন (৪৬) নামের এক স্বজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে মামলা করেছিলেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের এক ব্যক্তি। কিন্তু আদালতে বাদীর কিশোরী মেয়ে জানায় যে ওই স্বজন তার কোনো ক্ষতি করেননি। অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় উল্টো বাদীকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৯ মার্চ কিশোরীর বাবা মোশারফের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।
মামলা চলাকালে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে বাদীর মেয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিতে বলে, বাবা ও ওই স্বজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে মামলাটি হয়েছে। স্বীকারোক্তি গ্রহণের পর মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত মোশারফকে খালাস দেন আদালত। আদালত বাদীর বিরুদ্ধে ২১১ ধারায় মামলা করে ব্যবস্থা নিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন।
এরপর দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ মিথ্যা মামলা করার দায়ে বাদীকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
তবে কিশোরীর মায়ের ভাষ্য, ‘মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে গ্রামের সবাই মিলে বিষয়টি সমঝোতার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সমঝোতা হলে মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য আদালতে গিয়ে মেয়েটি ওই কথা বলে। আপস-মীমাংসা করতে গিয়ে উল্টো আমার স্বামীর বিরুদ্ধেই মামলা হলো। শাস্তি হলো।’