হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে করা আবেদনের তথ্য গোপন করে আবার অন্য একটি বেঞ্চ থেকে জামিন আবেদন শুনানি করায় ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ আরিফের জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি জাহিদ সারোয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এই আদেশ দেন।
একইসঙ্গে দাখিল করা হলফনামার ছক পরিবর্তন করতে রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। হলফনামায় আর কোনো আবেদন করা হয়নি বা অন্যকোনো আদালতে খারিজও হয়নি এমন শর্তারোপ করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার তদবিরকারক মাহাতাব উদ্দিনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চাটার্জী বাপ্পী এ আদেশের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৩ মে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রেজাউল করিম রাসেলকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা জালাল উদ্দিন বাদি হয়ে মামলা করেন। মামলায় আরিফকে এক নম্বর আসামি উল্লেখ করা হয়। এই মামলায় গত ১২ জানুয়ারি বিচারপতি ফরিদ আহমেদের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আরিফকে জামিন দেন।
এই জামিনের পর রাষ্ট্রপক্ষ জানতে পারে, তথ্য গোপন করে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে আরিফ একই বিষয়ে আরও একটি জামিন আবেদন করে যা ১২ জানুয়ারি ওই বেঞ্চের কার্যতালিকার ২২৬ নম্বরে ছিল।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষ আরিফের জামিনের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ১৩ জানুয়ারি আবেদন করে। এ আবেদন পাবার পর হাইকোর্ট আরিফের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ও মো. আসাদুজ্জামানের কাছে ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশে ওই দুই আইনজীবী ব্যাখ্যা দাখিল করেন। এরপর আদালত আরিফের জামিন বাতিল করেন ও মামলার তদবিরকারককে জরিমানা করেন।
ব্যাখ্যার বিষয়ে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা এই মামলার আসামির পক্ষে জামিন আবেদন করি এবং তার জামিন মঞ্জুরও করেন হাইকোর্ট। কিন্তু সে অন্য এক আইনজীবীর মাধ্যমে তথ্য গোপন করে অপর একটি বেঞ্চে একই ধরনের জামিন আবেদন করে সেটি আদালত জানতে পারেন। তখন আদালত আমাদের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বলেন। আমরা ব্যাখ্যা দেওয়ার পর তার জামিনের তদবিরকারককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও আসামির জামিন বাতিল করা হয়।