ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে গত ১২ মে থেকে ২০ মে নাগাদ জামিন পেল সমাজসেবা অধিদফতরের অধীন ৩টি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ২৪৭ শিশু। ইতোমধ্যে বিশেষ সরকারি ব্যবস্থাপনায় জামিনপ্রাপ্ত ১৭৪ শিশুকে তাদের অভিভাবকের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সংবাদটি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডট কমকে নিশ্চিত করেছেন।
সমাজসেবা অধিদফতর দেশের ৩টি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পরিচালনা করে আসছে। কেন্দ্র ৩টি গাজীপুর জেলার টঙ্গী ও কোনাবাড়ী এবং যশোরে অবস্থিত। এরমধ্যে টঙ্গী ও যশোরের কেন্দ্র দুটি বালক শিশুদের জন্য নির্ধারিত। আর কোনাবাড়ীর কেন্দ্রটিতে কন্যাশিশুদের রাখা হয়। শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী আদালত আইনের সঙ্গে সংঘাতে বা সংস্পর্শে আসা শিশুদের জেল খানায় না পাঠিয়ে তাদের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়ে থাকে।
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের আগ পর্যন্ত ৩০০ আসন বিশিষ্ট গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৬৯৫ শিশু ছিল। যা ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। অন্যদুটি প্রতিষ্ঠানে ও ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি শিশু অবস্থান করছিল। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিল তারা।
এদিকে কোভিড-১৯ দুর্যোগে দেশের সকল আদালতের স্বাভাবিক বিচার ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়। এতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের জামিন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে। জামিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অবস্থানরত শিশুদের সুরক্ষা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়ে বলে জানায় সমাজ সেবা অধিদফতর।
সমাজসেবা অধিদফতরের গবেষণা, মূল্যায়ন, প্রকাশনা ও গণসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. সাজ্জাদুল ইসলাম গণমাধ্যমেকে জানান, ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে শিশুদের জামিনে মুক্ত করতে সমাজ সেবা অধিদফতর নানামুখী উদ্যোগ ও যোগাযোগ রক্ষা করে। একাজে ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি অব চাইল্ড রাইটস’ এর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. ইমান আলী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। জামিনপ্রাপ্ত শিশুদের এই কমিটির উদ্যোগে সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে ইউনিসেফের সহযোগিতায় অভিভাবকের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
সরকার গত ৯ মে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ জারি করে। একইসঙ্গে উচ্চ আদালত হতে জারি করা হয় বিশেষ প্রাকটিস নির্দেশনা। এর ফলে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার পথ উন্মুক্ত হয়।