তানজিম আল ইসলাম :
যুগ যুগ ধরে আমরা ঐতিহ্য এবং প্রথা হিসেবেই আইনজীবী এবং বিচারকরা নির্ধারিত কালো কোট গাউনের পোশাক পরিধান করে আসছি। আমাদের পোশাকবিধিও এভাবেই র্নিধারন করা আছে। আদতে আমরা ঔপনিবেশিক প্রথা বহন করে আসছি। যদিও এ পোশাক আমাদের দেশের আবহাওয়া বান্ধব নয়। আদালতে প্রচন্ড গরমে আইনজীবী এবং বিচারকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই এ পোশাক পরিধান করতেই হয়। অনেকবার এ পোশাকবিধি পরিবর্তনের কথা বলা হলেও তা কোন ফোরামেই জোড়ালোভাবে উত্থাপিত হয়নি।
বর্তমানে করোনার এ পরিস্থিতিতে সাধারন ছুটি অর বর্ধিত করা হয়নি। হয়ত আদালতও পুরোপুরি বিচারিক কার্যক্রম শুরু হতে পারে আবার সীমিত আকারেও চলতে পারে। যেভাবেই হোক না কেন আদালতে আইনজীবী এবং বিচারকদের যেতেই হবে। আর এটা স্পষ্টই মনে হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি এত সহজে নিয়ন্ত্রণে আসবে না। তাই সর্বোচ্চ সতর্ক থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আদালতের কার্যক্রম পরিচালননায় নজর দিতে হবে। কিন্তু আইনজীবী এবং বিচারকদের প্রচলিত পোশাকে কোনভাবেই স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো যাবেনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বাইরের কাপড় বাসায় এসে ধুয়ে দিতে কিংবা রোদে কয়েকদিন রাখতে। কিন্তু কোট কিংবা গাউন প্রতিদিন বাসায় এনে ধোয়া কিংবা রোদে শুকানো সম্ভব নয়। এছাড়া সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে ইমিউন সিস্টেম ডেভেলপ করার ক্ষেত্রে এ পোশাক অন্তরায় হিসেবেই কাজ করবে বলে আমার ধারনা। এজন্য করোনাকালীন এই সময় পোশাকবিধির পরিবর্তন আনা জরুরী।
সম্প্রতি ইন্ডিয়ায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের জন্য ড্রেসকোড সাময়িকভাবে পরিবর্তন এনেছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা। সেখানকার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে আইনজীবীদের সাদা শার্ট বা সাদা শাঢ়ি/সালোয়ার কামিজ পড়তে হবে। কালো কোট বা গাউন পড়তে হবেনা। এমনকি ভার্চুয়াল শুনানিতেও কালো কোট পড়তে হবেনা।
আমাদেরও পোশাকবিধি পরিবর্তন করে সাদা র্শাট এবং যেকান কালারের প্যান্ট, মেয়েরা সাদা শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ পড়ার বিধান করা আবশ্যক। সাথে কালো টাই কিংবা ব্যান্ড থাকতে পারে। তবে সব আইনজীবীকে বাধ্যতামূলক পরিচয়পত্র ঝোলাতে হবে।
মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়ের নিকট এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধি বিধান পরিবর্তন করে করোনকালীন সময়ে আইনজীবী এবং বিচারকদের পোশাক বিধি সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারির পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। এক্ষেত্রে বার কাউন্সিলকে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে আইনজীবীদের বৃহৎ স্বার্থে।
তানজিম আল ইসলাম: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট