করোনা দুর্যোগে দেশের হাসপাতালগুলোর ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) বেড ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, সবকিছু যদি ঠিকভাবে মনিটরিং করা হয় তাহলে রোগীরা কেন এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালের রাস্তায় ঘুরছে?
এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১০ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। এরপর আদালত এ রিটের পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ জুন দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইয়াদিয়া জামান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
রিটকারী আইনজীবী শুনানিতে আদালতকে বলেন, করোনার মধ্যে রোগীরা আইসিইউ বেড পাওয়ার আশায় একে হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরে হয়রান হচ্ছেন। করোনাকালে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার জন্য যেসব হটলাইন নম্বর রয়েছে সেগুলোতে আমি নিজেও চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রথম চারটি নম্বর কল রিসিভ করেনি। তবে পঞ্চম নম্বরে কল দেয়া হলে তা রিসিভ করা হয়। কিন্তু রোগী ভর্তির জন্য কোনো আইসিইউ বেড খালি রয়েছে কিনা তা জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো তথ্য না দিয়ে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। সুতরাং এর দ্বারা বিষয়টি স্পষ্ট যে, সাধারণ রোগীরা ওইসব হটলাইনে কল করে দেশের কোনো হাসপাতালে আইসিইউ বেড খালি রয়েছে কিনা, তা তারা জানতে না পেরে হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে হয়রান হচ্ছেন।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে ৭৩৩টি আইসিইউ বেডের তথ্য আদালতের সামনে তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিকালে তারা আদালতকে জানান, আইসিইউ বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। কেননা আইসিইউ বেড তৈরি করলেই হবে না, এর পরিচালনার জন্য দক্ষ লোকবলেরও প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে আইসিইউ বেডগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোলরুম থেকে সরকারিভাবে সবকিছুই মনিটরিং করা হচ্ছে।
এরপর আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশ করে বলেন, যদি সবকিছু মনিটরিং করা হয়েই থাকে তাহলে রোগীদের এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে কেন?
-সংবাদ জাগো নিউজ