বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রকাশ চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে এ ভুয়া সনদে ক্ষতিগ্রস্তদের ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতেও বলা হয়েছে নোটিশে।
আজ রোববার (১৯ জুলাই) মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পরিচালকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম এ নোটিশ পাঠান।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে যেসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করোনা টেস্ট করানো হয় সেগুলোর তালিকা, স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতালগুলোর নাম ও সংখ্যা প্রকাশসহ করোনা টেস্ট এবং করানো চিকিৎসার হাসপাতালগুলো মনিটরিংয়ে প্রত্যেক পুলিশ স্টেশনে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়।
পাশাপাশি রিজেন্ট থেকে ভুয়া করোনার সনদ দেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রকাশ, রিজেন্টের এ প্রতারণার কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। সরকার চাইলে ক্ষতিপূরণ রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে আদায় করতে পারে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও করোনার সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি সপ্তাহে যাতে সেবা নিয়ে পরিপূর্ণ একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায় সেজন্য একটি নীতিমালা করার কথাও বলা হয় নোটিশে।
নোটিশ প্রেরণের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বলেন, সরকার প্রধান অনেক টাকা প্রণোদনা দিচ্ছে। টাকা খরচ করছে স্বাস্থ্যসেবার জন্য। কিন্তু মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরে সঠিক সুপারভিশন না করার কারণে এ সমস্ত ঘটনা ঘটছে। এটার দায় তারা এড়াতে পারে না। এখন দেখা যাচ্ছে, অনেকের লাইসেন্স আছে, কিন্তু ভূয়া রিপোর্ট দিচ্ছে। এটা মনিটরিংয়ের দায়িত্ব অধিদপ্তরের। কিন্তু তারা তা করতে পারেনি।
নোটিশ প্রেরণকারী আইনজীবী বলেন, নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে গত ৬ জুলাই রাতে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালের প্রধান শাখায় অভিযান পরিচালনা করে। পরদিন হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গত ৭ জুলাই সন্ধ্যার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে হাসপাতালের শাখা দু’টির (উত্তরা ও মিরপুর) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশের কথা বলা হয়। ওই দিন বিকেলে উত্তরায় রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দেয় র্যাব।
গ্রেফতারের পর গত ১৬ জুলাই সাহেদকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই দিন শুধু রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার ভুয়া রিপোর্ট প্রদান সংক্রান্ত মামলাতেই গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয় তাকে।