জাহালমকাণ্ডের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দুই মামলায় জামিন পাননি ব্যবসায়ী আমিনুল হক সরকার। তাকে জামিন না দিয়ে আবেদনটি নিয়মিত আদালত না খোলা পর্যন্ত স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করেছেন আদালত।
তার জামিন আবেদন শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২১ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের জানান, ব্যবসায়ী আমিনুল হক জামিন পাননি। তার জামিন আবেদন নিয়মিত আদালত খোলা না পর্যন্ত স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রেখেছেন আদালত।
হাইকোর্টের জামিন আবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল থেকে আমিনুল হক কারাগারে রয়েছেন। সবশেষ ২০ জানুয়ারি এবং ১০ ফেব্রুয়ারি দুই মামলায় বিচারিক আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে ২০১২ সালে দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাহিদ রামপুরা ও ধানমন্ডি থানায় এ মামলাগুলো করেন। মামলার এজাহারে আমিনুল হকের নাম ছিল না। পরবর্তীকালে এক আসামির জবানবন্দিতে তার নাম উঠে আসে। এসব মামলায় আবু সালেক নামের আসামি হিসেবে পাটকল শ্রমিক জাহালম জেল খেটেছিলেন।
পরে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত। পরে রুল জারি করা হয় ও জাহালম মুক্তি পান। এছাড়া দুদকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চান। পরে এ বিষয়ে রুল শুনানি শেষে রায়ের জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ রয়েছে।
ওই দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না…আমি নির্দোষ।’ আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লোকটির বয়স ৩০-৩২ বছরের বেশি না। পরনে লুঙ্গি আর শার্ট। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশে তাকে বারবার বলতে দেখা যায়, ‘আমি আবু সালেক না।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খেটেছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।