বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা ব্রিটিশ শাসনের উত্তরাধিকার সূত্রে চলে এসেছে। সময়ের প্রয়োজনে অনেক রীতিতে পরিবর্তন এলেও আদালতে কালো কোট বা গাউন পরিধানের রীতিতে কোন পরিবর্তন আসেনি।
১৬৮৫ সালে ইংল্যান্ডে রাজা দ্বিতীয় চার্লস মারা যাবার পর শোকের প্রকাশের জন্য আদালতে আইনজীবী এবং বিচারপতিরা কালো কোট ও গাউন পরা শুরু করেন। সেই থেকে গত প্রায় ৩৩৫ বছর যাবৎ কালো কোট পরিধান করার রেওয়াজ চালু আছে।
শত-শত বছর যাবৎ এই পোশাক কেন প্রচলিত আছে কিংবা এক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন আসেনি কেন সে নিয়ে পরিষ্কার কোন ধারণা আইন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যাওয়া যায়নি। তবে কালো পোশাক পরিধানের মাধ্যমে আইনজীবীরা নিজেদের একটি স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করেন বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
কালো কোট পরে আদালতে উপস্থিত হবার বিষয়টি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইনে রয়েছে। যে কোন আইনজীবী চাইলেই তার নিজের ইচ্ছেমতো পোশাক পরে আদালতে উপস্থিত হতে পারবেন না। কালো কোর্ট-সাদা শার্ট এবং গাউন পরিধানের মাধ্যমে আদালত প্রাঙ্গণ এবং কক্ষে আইনজীবী এবং বিচারপতিদের অন্যদের চেয়ে আলাদাভাবে চেনা যায়। আদালত কক্ষে বাদী-বিবাদীসহ অনেকেই আসেন। সাদা শার্ট এবং কালো কোটের মাধ্যমে আইনজীবীদের অন্যদের চেয়ে পৃথক করা যায়।
যদিও এই পোশাক নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত রয়েছে। অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশের আবহাওয়ার সাথে কালো পোশাক আরামদায়ক নয়। গরমের সময় কালো কোট পরে আদালতে কার্যক্রম পরিচালনা করতে আইনজীবী এবং বিচারপতিদের অসুবিধা হয়। একপক্ষের মতে আবার একটি স্বাধীন দেশে আদালতের পোশাক ঔপনিবেশিক আমলের রীতি দ্বারা নির্ধারিত হওয়া উচিত নয়। আবার অনেকে আইনজীবীদের কালো কোট পরিধান করার প্রথার পক্ষে। তারা মনে করেন, আবহাওয়ার সাথে কালো কোটের সম্পর্ক নেই। কেননা বাংলাদেশের মতো আবহাওয়ার অনেকে দেশেরই আইনজীবীরা কালো পরিধান করেন। কোট, টাই, গাউন ঐতিহ্য, পেশাগত পরিচয়ের চিহ্ন।