মহামারি করোনাকালে শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া ভার্চ্যুয়াল আদালতের পাশাপাশি শারীরিক উপস্থিতিতে হাইকোর্টে বিচারকাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ চার মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল বুধবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটা থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারকাজ শুরু হয়। আইনজীবী, সহকারী ও বিচারপ্রার্থীদের পদচারণায় দীর্ঘ দিন পর মুখরিত হয় আদালত প্রাঙ্গণ।
এ দিন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে প্রবেশের পথে স্বাস্থবিধি অনুসারে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করা হয়। আদালত কক্ষগুলোতেও স্বাস্থবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা হয়। তবে বাইরে সামাজিক দূরত্ব মানার প্রবণতা কম দেখা গেছে।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ফুলকোর্ট মিটিং হয়েছিল। সেখানে কিছু কিছু বিচারপতি স্বশরীরে বিচারকাজ করতে চেয়েছেন এবং অনেক বিচারপতি ভার্চ্যুয়ালি করতে চেয়েছেন। বিচারপতিদের নিজ ইচ্ছার ফলে এটা হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বশরীরে মামলা করতে সামাজিক দূরত্ব খুব শক্তভাবে পালন করতে হবে।
এর আগে সোমবার দুই পদ্ধতিতে বিচার কাজ পরিচালনার জন্য ৫৩টি বেঞ্চ গঠন করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। এর মধ্যে ভার্চ্যুয়ালি ৩৫টি এবং বাকি ১৮টি বেঞ্চ শারীরিক উপস্থিতিতে পরিচালিত হবে।
এ বিষয়ে ওই দিন ভার্চ্যুয়াল আদালতের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে আগামী বুধবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন ২০২০ এবং অত্র কোর্টের জারিকৃত প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য প্রধান বিচারপতি বেঞ্চসমূহ গঠন করেছেন। এতে দ্বৈত এবং একক ৩৫টি বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে।
শারীরিক উপস্থিতিতে আদালতের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে আগামী বুধবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য প্রধান বিচারপতি বেঞ্চসমূহ গঠন করেছেন।
এতে দ্বৈত এবং একক ১৮টি বেঞ্চ গঠন করা হয়।
এর আগে গত ৬ আগস্ট দুই পদ্ধতিতে বিচারকাজ চলবে বলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে ফুলকোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
মহামারি করোনাকালে ২৬ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এর সঙ্গে মিল রেখে আদলতেও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে দফায় দফায় সাধারণ ছুটির মেয়াদও বাড়ানো হয়।
এর মধ্যে সরকার অধ্যাদেশ জারির পর ১১ মে থেকে আদালতে ভার্চ্যুয়াল বিচার কাজ শুরু হয়। ওই অধ্যাদেশটিকে পরে আইনে পরিণত করা হয়। সবশেষ গত ১৬ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে সরকার ৩০ মে মাসের পর সাধারণ ছুটি আর না বাড়ালেও আদালত অঙ্গনে নিয়মিত কার্যক্রমের পরিবর্তে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল বিচার কাজ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
কিন্তু গত ৩০ জুলাই অধস্তন আদালতে ৫ আগস্ট থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারকাজ চালুর সিদ্ধান্ত দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সে অনুসারে অধস্তন আদালতে বিচার কাজ শুরু হয়।