ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারদের বিরুদ্ধে অনিয়মের ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলায় এক আইনজীবীকে ১০০ টাকা জরিমানা করে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। সেই জরিমানা ৫০ পয়সার ২০০ কয়েন দিয়ে পরিশোধ করে অভিনব কায়দায় প্রতীকী প্রতিবাদ জানান দণ্ডিত আইনজীবী।
ন্যায় বিচার সবার জন্য সমান হয় না। সর্বোচ্চ আদালতেও ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই এগিয়ে। এমনই অভিযোগ করেছিলেন আইনজীবী দীপক কন্সল। তিনি হাতেনাতে প্রমাণও দিয়েছিলেন। আগেরদিন রাত আটটায় রেজিস্টার হওয়া মামলার শুনানি হয় পরেরদিন কোর্ট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই। কারণ সেই মামলা দায়ের করেছিলেন কোনও এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। দীপক সেই প্রমাণ তুলে ধরেছিলেন আদালতের সামনে।
তিনি অভিযোগ করেছিলেন, রেজিস্ট্রার সব সময় প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের মামলার শুনানি আগে করানোর ব্যবস্থা করে দেয়। ফলে রেজিস্ট্রার খাতার অনেক পিছনে থাকা কোনও প্রভাবশালীর দায়ের করা মামলার শুনানি হয়ে যায় নির্ধারিত সময়ের আগেই। সেক্ষেত্রে ন্যায়বিচার পেতে দেরি হয় কোনও সাধারণ মানুষের।
সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রা, এস আব্দুল নজির ও এম আর শাহ এদিন দীপকের অভিযোগ খারিজ করেছেন। একইসঙ্গে রেজিস্ট্রারের উপর ভিত্তিহীন অভিযোগ করায় দীপককে একশো টাকা সাংকেতিক জরিমানা করে বিচারপতিদের বেঞ্চ।
বিচারপতি জানিয়েছেন, রেজিস্ট্রির সব সদস্য দিন-রাত এক করে কাজ করেন। এই মামলা তাঁদের মনোবলে আঘাত হানতে পারে। রেজিস্ট্রাররা সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁদের বিরুদ্ধে এই ভিত্তিহীন অভিযোগের কোনও মানে নেই।
দীপক কিন্তু ছাড়র পাত্র ছিলেন না। তিনি সাম্প্রতিক একটি মামলার উদাহরণ তুলে ধরেন। জানান, ওই মামলায় রাত আটটায় দায়ের হওয়া মামলার শুনানি হয়ে গিয়েছিল পরেরদিন কোর্ট খোলার এক ঘণ্টার মধ্যে। এদিকে ওয়ান নেশন ওয়ান রেশন কার্ড মামলা শুনানির জন্য রেজিস্ট্রারের কাছে জমা পড়েছিল বেশ কয়েকদিন আগে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরাও মনে করেন, বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবশালীরা এগিয়ে। তাঁদের ভিআইপি ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। তবে এই নিয়ে কেউই বিচারপতির কাছে অভিযোগ করতে পারেননি। দীপক শেষমেশ বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধেন। তাই আদালত তাঁকে জরিমানা করলে সব আইনজীবীরা মিলে তার বিরোধ করেছেন।
৫০ পয়সায় কয়েন এখন তেমন পাওয়া যায় না। কিন্তু সব আইনজীবীরা মিলে ‘Contribute Rs 100’ নামের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ খুলে ৫০ পয়সার কয়েন সংগ্রহ করতে শুরু করেন। তার পর ২০০টি কয়েন কোর্টে জমা করা হয় জরিমানা হিসাবে। বার কাউন্সিল-এর তরফে এভাবেই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সূত্র- জি২৪ঘণ্টা