সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ ও সহায়তাকারীকে সুরক্ষা প্রদান নীতিমালা বাস্তবায়ন না করায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড ট্রাস্ট সার্ভিসেস (ব্লাস্ট) এর আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।
আইনজীবী রাশনা ইমাম জানান, ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট হাইকোর্ট ওই রায় দেন। রায়ের কিছুই তারা বাস্তবায়ন করেননি। অদ্যবধি নীতিমালাও গেজেট আকারে প্রকাশ না করায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড ট্রাস্ট সার্ভিসেস (ব্লাস্ট) আদালত অবমাননার আবেদন করেন। এরপর আদালত রুল জারি করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি জনৈক আরাফাত নামে একজন বাসের হেলপার পা পিছলে নিচে পড়ে যান এবং মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই হাসপাতাল চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানায়। সেই আহত ব্যক্তিকে নিয়ে অন্য আরো ২টি হাসপাতালে নেয়া হলে সেগুলো থেকেও প্রত্যাখ্যাত হয়ে গুলশান থানা থেকে একজন সাব-ইন্সপেক্টরের সহায়তায় তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিয়ে আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড ট্রাস্ট সার্ভিসেস (ব্লাস্ট) ও সৈয়দ সাইফুদ্দীন কামাল। এ রিটের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে মারাত্মক আহত ব্যক্তিদের জরুরী চিকিৎসা সেবা দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশসহ কয়েকটি আদেশ দিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আদেশে হাইকোর্ট স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দুর্ঘটনাজনিত কারণে আঘাতপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোন ব্যক্তি যদি সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে তবে তাদের সুরক্ষার জন্য একটি নির্দেশনা তৈরি করার নির্দেশ দেন। ওই আদেশ অনুসারে সরকার নীতিমালা তৈরি করে আদালতে দাখিল করে। পরে শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন।
একই সঙ্গে ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের করা এ সংক্রান্ত নীতিমালার দুটি অংশে আদালতের পর্যবেক্ষণ যুক্ত করে নীতিমালাটি গেজেট আকারে দুই মাসের মধ্যে প্রকাশ করতে নির্দেশ দেন।