স্বামীর আয় জানার অধিকার নাকি স্ত্রীর নেই। এমনই বিস্ফোরক এক মন্তব্য করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন। ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন শুধু এ মন্তব্যই করেনি, সঙ্গে বিশেষ একটি পরিপ্রেক্ষিতে এ মন্তব্যের পক্ষে জোরালো যুক্তিও দিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘সংবাদ প্রতিদিন’ জানায়, স্বামীর আয় যাচাই করতে আয়কর সংক্রান্ত নথি চেয়ে ‘তথ্য জানার অধিকার আইনে’ আবেদন জানিয়েছিলেন এক নারী। সেই সূত্রেই সম্প্রতি এমন তত্ত্ব সামনে এসেছে।
কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন জানায়, রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই একজন ব্যক্তি আয়কর দিয়ে থাকেন। কোনো বৃহত্তর জনস্বার্থের প্রশ্ন জড়িত না থাকলে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির কাছে সেই তথ্য প্রকাশ করা যায় না। অতএব স্বামী যদি তা না জানান, তাহলে কোনোভাবেই স্ত্রী তা জানতে পারেন না।
ওই নারী স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের মামলা করেছেন। সেখানে খোরপোষের প্রশ্ন উঠতেই স্বামীর আসল আয়ের তথ্য সন্ধান শুরু করেন তিনি। এরপর তিনি ‘তথ্য জানার অধিকার আইনে’ আয়কর বিভাগের কাছে স্বামীর আয়কর সংক্রান্ত নথি চেয়ে আবেদন জানান। কিন্তু আয়কর বিভাগ সেই নথি তাকে দিতে অস্বীকার করে জানিয়ে দেয়, তথ্য জানার অধিকার আইনের (৮/১/জে) ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির আয়কর সংক্রান্ত তথ্য ‘এক্সেমপ্টেড ইনফরমেশন’ এর পর্যায়ে পড়ে। দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তিকে সেই তথ্য দেওয়া যায় না।
এরপর সরাসরি কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের দ্বারস্থ হন ওই নারী। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার নীরজ কুমার গুপ্ত বলেন, তথ্য জানার অধিকার আইনে কোনো ব্যক্তির আয়কর সংক্রান্ত নথির তথ্য তখনই অন্য কেউ পেতে পারেন, যখন তার সঙ্গে বৃহত্তর জনস্বার্থের প্রশ্ন জড়িত থাকে। কারণ কর দেওয়া রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা। ফলে সেই সংক্রান্ত তথ্য রাষ্ট্র ও সেই ব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা বাঞ্ছনীয়। এ ক্ষেত্রে কোনো বৃহত্তর জনস্বার্থ জড়িত না থাকায় স্ত্রী হলেও স্বামীর আয়কর সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার অধিকার তার থাকতে পারে না।
এরপরই আবেদনটি খারিজ হয়ে যায়। এর থেকে স্পষ্ট হয় যে স্বামী বা স্ত্রী কিংবা কোনো নিকটাত্মীয় হলেও জনস্বার্থের প্রশ্ন জড়িত না থাকলে কারো আয় সংক্রান্ত তথ্য অন্য কারও জানার অধিকার নেই।