দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর জন্য বই কেনায় জালিয়াতি ও অনিয়ম করে বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরির ঘটনায় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিটের আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে কমিটিতে থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। এক মাসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
পরে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে যে দুটি বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব এবং মেধাস্বত্ব জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে রিট দায়ের করেছিলাম। এখানে গ্রন্থস্বত্ব এবং মেধাস্বত্ব বিক্রি করা হয়েছে, চুরি করা হয়েছে, এ অভিযোগ আছে। আমরা স্বাধীন অথবা জুডিসিয়াল ইকনোয়ারি চেয়েছিলাম। রুল চেয়েছিলাম, বঙ্গবন্ধুর নামে প্রকাশিত দুটি বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব ও মেধাস্বত্ব রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণ করা হবে না এই মর্মে।
তিনি বলেন, ‘আদালত রুলটি দিয়েছেন। স্বাধীন কমিটি হবে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে। কমিটিতে থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মফিদুল হক। আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত করে এটি হাইকোর্টে জমা দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নতুন প্রজন্মের সামনে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগটি অনেক প্রেস্টিজিয়াস ব্যাপার। এটা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইমেজের ব্যাপার। এ রকম একটা জায়গায় যদি কোনো দুর্নীতির অভিযোগ থাকে তাহলে এটা পুরোপুরি খোলাসা হওয়া জরুরি। এজন্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনকোয়ারি চেয়েছিলাম। ২/১ জন সাংবাদিকের কারণে কমিউনিটির শত শত সাংবাদিক যারা ভালো ভালো সাংবাদিক আছেন তারা বিব্রত হতে পারেন। আমি বলতে চাচ্ছি নাজমুল সাহেব তো সব সাংবাদিকের প্রতিনিধি না। ওনার এই যে কর্ম এটা সব সাংবাদিককে বিব্রত করছে। আমি মনে করি এটা সামনে খোলাসা হয়ে আসা উচিত।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর নামের বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্হস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের এক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে স্বাধীন কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিটে বঙ্গবন্ধুর নামের বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্হস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
রিটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ এবং ওই সাংবাদিক ও তার স্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।